বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেবে ঢাবি-চবি

Image

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চবি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে তাদের ভর্তি পরীক্ষা চবি ক্যাম্পাসের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।

তবে গত দুই বছর ধরে বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা বললেও এ ব্যাপারে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে এ বছরও রাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের রাবি ক্যাম্পাসেই পরীক্ষায় অংশ নিতে যেতে হতে পারে।

আরো পড়ুন: বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ২ মার্চ !

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাবি ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত উপ-কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও আবেদন শুরু এবং শেষের বিস্তারিত সময়সীমা ঘোষণা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সভা সূত্রে জানা গেছে, বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে কোনো আলোচনা সেখানে হয়নি এবং এর কোনো প্রস্তুতিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, ইউজিসি একক ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পর পর্যাপ্ত সময় না থাকায়, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে পারেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছিলেন, ‘ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট লাঘবের জন্য সারাদেশের চারটি শহরে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কথা আমরা ভাবছি। আমরা পরবর্তী একাডেমি কাউন্সিল ও ডিনস্ কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’ তবে এখনও পর্যন্ত তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা হলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বাড়তি চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারতো বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক।

বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজনের প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ঠিক কোন কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি আমি নিশ্চিত নই। তবে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে। শুরুতেই সব বিভাগীয় শহরে না গিয়ে একটি বা দুটি বিভাগে ট্রাই করা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি। এতে অভিভাবকরা বাড়তি চিন্তা থেকে মুক্তি পেত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘গত বছরও তো বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেবার ব্যাপারে প্রশাসন এক প্রকার কমিটমেন্ট করেছিল। কিন্তু ঠিক কোন কারণে এটি হচ্ছে না, তাঁরাই ভালো জানেন। আমার কাছে মনে হয় এখানে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। গতবারও শিক্ষার্থীদের যে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি হয়েছে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে অনেকটাই কমে আসতো।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘জনবল সংকটসহ পারিপার্শ্বিক নানা কারণে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার একটি সুনাম রয়েছে; আমরা চাই সেটি অক্ষুন্ন থাকুক। গত দুই বছরে দেখা গেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে জালিয়াতি করার চেষ্টা করছে। ফলে সবকিছু মিলিয়েই ডিন ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের কমিটি ভর্তি পরীক্ষা ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের ৫ মার্চ। ভর্তির প্রাথমিক আবেদন ৮ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ১৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। চূড়ান্ত আবেদন প্রথম দফায় ২৬ থেকে ২৯ জানুয়ারি, দ্বিতীয় দফায় ১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় দফায় ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি এবং চতুর্থ দফায় ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত করা যাবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।