সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ফাটল,দুর্ঘটনার আশঙ্কা

Image

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার রানাহিজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে শিক্ষা-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সামনের অংশে এত বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে যে যেকোনো সময় তা ভেঙে পড়তে পারে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে। তাই নতুন ভবনে ক্লাস করানো যাবে না।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ওই ভবনের সামনের বারান্দার অংশে বিশাল ফাটল। একপাশ থেকে অন্যপাশের মানুষ দেখা যায়। যেকোনো সময় মূল ভবন থেকে খুলে পড়ে যেতে পারে। রেলিংয়ের একপাশ খুলে পড়ে গেছে। ভবনের দেওয়ালের রং উঠে গেছে। এছাড়া দেওয়ালের আস্তরণও অমসৃণ। এক ফলক দেখেই বোঝা যায় এ যেন দায় সারা যেনতেন কাজ।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মোহনগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে এ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৭৯ লাখ ৩৯ হাজার ৭৬৭ টাকা চুক্তিমূল্যে কাজটি পায় কিশোরগঞ্জের মেসার্স রাজিব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহ আলম মাহবুব রাজিব। এক বছরের কাজ শেষ হয় পাঁচ বছরে। চলিত বছরের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পরের মাসে তা হস্তান্তর করা হয়। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে মোট ১৩১ জন শিক্ষার্থী আছে। তাদের পাঠদানে পাঁচজন শিক্ষক আছেন। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষক মেহেরুন্নেছা আক্তার ভারপ্রাপ্ত হিসেবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক শিক্ষাবার্তাকে জানান, কাজ শুরুর পর বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানের মেয়েকে বিয়ে করেছেন ঠিকাদার রাজিব। ফলে নিম্নমানের কাজ করলেও ঠিকাদারের পক্ষে কাজ করেছেন তার শ্বশুর। শ্বশুরের প্রভাব খাটিয়ে বিনা পরিদর্শনে প্রত্যয়ন পেয়ে গেছেন ঠিকাদার। এতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী হচ্ছি।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেছা আক্তার বলেন, নতুন ভবনের কাজ যেনতেন হয়েছে। সামনের অংশে দুই পিলারের মাঝে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। তিন-চার মাস আগে কাজ শেষ হয়েছে। এখনো উদ্বোধন হয়নি এরই মধ্যে রেলিং ভেঙে গেছে। দেওয়ালের রং উঠে গেছে। খুবই বাজে অবস্থা ভবনের। এ অবস্থায় সেখানে পাঠদান সম্ভব নয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কেউ ভয়ে সেখানে যাবে না।

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, নতুন ভবন হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা আনন্দ বিরাজ করছিল। কিন্তু সব আনন্দ মলিন হয়ে গেছে। তাই আমরা পুরাতন ভবনে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। ভবনের অনিয়মের বিষয়টি এলজিইডি প্রকৌশলীসহ শিক্ষা অফিসকে অবহিত জানানো হয়েছে।

ভবন নির্মাণে অনিয়ম থাকার পরও কীভাবে প্রত্যয়নে স্বাক্ষর করলেন এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষা অফিস প্রথমে ভবনের প্রত্যয়নে স্বাক্ষর করেছে। পরে আমি করেছি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।