‘রাত আড়াইটায় বের হয়ে সকাল ৬টায় বাসায় ফেরে মামুন’

Image

নাটোর প্রতিনিধি, ১৪ আগস্ট ২২ ।

নাটোর শহরের বালারীপাড়ায় ভাড়া বাসা থেকে খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর খাইরুন নাহারের স্বামী কলেজছাত্র মামুন হোসেনকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। প্রতিবেশী ও শিক্ষিকার আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ দাবি করছেন- এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। শনিবার রাতে মামুন কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে সমকালকে জানিয়েছেন বাসার কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন।

কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন বলেন, ‘শনিবার রাত ১১টার দিকে বাসায় প্রবেশ করেন মামুন। আবার রাত আড়াইটার দিকে বের হন। কেন বের হচ্ছেন- জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। পরে সকাল ৬টায় মামুন আবার ফিরে আসেন।’

তিনি বলেন, ‘বাসায় ফেরার পর মামুন আমাকে ডাকেন। আমি চার তলায় গিয়ে দেখি, খাইরুন নাহারের লাশ ঘরের মেঝেতে।’

এদিকে শিক্ষিকার চাচাতো ভাই সাবের হোসেন বলেন, ‘সকালে একটা ফোন আসে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছেন। খবর শুনেই গুরুদাসপুর থেকে ছুটে আসি। এসে দেখি, বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ রয়েছে। এতে মনে হচ্ছে ঘটনাটি আত্নহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

এর আগে রোববার ভোরে নাটোর শহরের বালারীপাড়া এলাকার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘এই দম্পতির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। এই সমালোচনার কারণেই খাইরুন নাহার আত্নহত্যা করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে।’

সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামেরর মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এর আগে এক ছেলের জননী খায়রুন নাহারের ডিভোর্স হয়েছিল আগের স্বামীর সঙ্গে। পরে ছয় মাসের প্রেমের পর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে মামুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়। এরপর আজ ভোরে ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।