১০ শিক্ষক-কর্মকর্তার ‘নিয়মবহির্ভূত’ পদোন্নতি পাবিপ্রবিতে

Image

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) প্রায় ঘটছে নীতিমালা অমান্য করে পদন্নোতি দেওয়ার ঘটনা। গত ছয় বছরে নীতিমালা অমান্য করে ৮ জন কর্মকর্তা ও ২ জন শিক্ষককে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে আরও চার কর্মকর্তাকে পদন্নোতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে দুবার অডিট আপত্তি আসলেও বিষয়টিকে আমলে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তাদের দাবি, নীতিমালা অনুসরণ করেই যথাযথ প্রক্রিয়ায় এসব কার্যক্রম হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে প্রশাসনিক কোনো পদের অতিরিক্ত কোনো পদ নেই। অর্থ্যাৎ কাউকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, অতিরিক্ত পরিচালক পদে নিয়োগ কিংবা পদন্নোতি দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু অতিরিক্ত পদ না থাকা স্বত্বেও ২০১৭ সালে থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫ম গ্রেডের ৮ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ৪ জন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, ১ জন অতিরিক্ত গ্রন্থাগারিক, ২ জন অতিরিক্ত পরিচালক, ১ জন অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রয়েছেন। অর্গানোগ্রামে ২টি বিভাগের জন্য অধ্যাপক পদ না থাকলেও ২০২০ সালে ২ জন সহযোগি অধ্যাপককে অধ্যাপক পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত পদে পদোন্নতি দেওয়ায় বাংলাদেশ শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে দুবার অডিট আপত্তি এসেছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের অডিট রিপোর্টে ৬ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে অডিট আপত্তি আসে। ওই অডিট আপত্তিতে ৬ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্তি পদে পদন্নোতি দেওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ লাখ ৩৪ হাজার ৯৩৫ টাকা আর্থিক ক্ষতি দেখানো হয়।

অডিট পরিদর্শক দল কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পদোন্নতি সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা করার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে ওই কর্মকর্তাদের পূর্বের পদে পুনঃপদায়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সুপারিশ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে সুপারিশ গ্রহণ করেননি।

একই বিষয় নিয়ে ২০২৩ সালে ২০২০-২১ থেকে ২০২১-২২ অর্থ বছরে পুনরায় অডিট আপত্তি আসে। এ সময় ২ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মকর্তাকে অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদোন্নতির বিষয়ে অডিট আপত্তি আসে। এ অডিট আপত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা আর্থিক ক্ষতি দেখানো হয়েছে।
এ অডিট রিপোর্টেও পরিদর্শক দল শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পদোন্নতি সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগারে জমা করার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে ওই কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের পূর্বের পদে পুনঃপদায়নের সুপারিশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সুপারিশ গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাদের পূর্বের পদে পুনঃপদায়ন এবং তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগারে জমা দেননি।

কর্মকর্তাদের পদন্নোতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্মকর্তা নীতিমালাও লঙ্ঘন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুবারের অডিট আপত্তিতে এ বিষয়টিও তুলে ধরেছে কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নীতিমাল-২০১৪ এর ধারা ৩.১ এ অনুযায়ী ৪র্থ গ্রেডের কোন পদে পদোন্নতির সুযোগ নেই। এ পদে কাউকে নিতে হলে সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু এ পদে সরাসরি নিয়োগ না দিয়ে ৮ কর্মকর্তাকে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।