বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য সরকারি সংস্থা গঠন

গুচ্ছের ভর্তি আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক,১ এপ্রিল ২০২৩:

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা চলছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। এরইমধ্যে আলোচনায় এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য সরকারি সংস্থা গঠনের। এর নাম হতে পারে ন্যাশনাল টেস্টিং অথোরিটি বা এজেন্সি (এনটিএ)।

গত সপ্তাহে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পরিচালন নীতি ও শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্তের আলোকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে সভা ডেকেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সভাটি সোমবার (৩ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে।

এ সংক্রান্ত যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে এনটিএ গঠনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে। এ সংস্থা কেমন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে নীতি নির্ধারকরা প্রাথমিক একটি ধারণা দিয়েছেন। এ সংস্থা গঠনে আইন করারও প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচনের আগে এর কার্যক্রম শুরু সম্ভব নয় বলে জানা গেছে।

ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতসহ উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে নির্দিষ্ট অথরিটি রয়েছে। সেখানে পরীক্ষা নিয়ে স্কোরের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হয়। বিষয়টি আইইএলটিএস, জিআরই এর মতো। বাংলাদেশেও সে ধরণের সংস্থা গঠনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এতে ভারতীয় মডেলটি আলোচনায় আসছে বেশি। ভারতে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় শিক্ষার্থীদের।

বাংলাদেশে এ ধরনের সংস্থা গঠন হলে সেখানে একজন চেয়ারম্যান থাকবেন। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট বোর্ড থাকবে, যেখানে পিএসসির আদলে শুধুমাত্র একাডেমিশিয়ানরা থাকবেন। পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেবে বোর্ড।

পরীক্ষার জন্য একটি প্রশ্ন ব্যাংক থাকবে। পরীক্ষা হবে কম্পিউটারভিত্তিক। অংক থাকলে সেটি খাতার লিখে আপলোড করতে হবে। সঙ্গে ভাইভাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে স্কোর দেওয়া হবে। সে স্কোরের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারবেন।

আরো জানা গেছে, এ ধরনের পরীক্ষা বছরে দুবার হতে পারে। জানুয়ারি ও বছরের মাঝামাঝি। প্রথমবার যারা ভর্তি হবেন তারা দ্বিতীয়বার আর ভর্তির সুযোগ পাবেন না। এরপর পরের পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করবেন তারা ভর্তির সুযোগ পাবেন। পরের বছর একই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা হবে। আইইএলটিএস কিংবা জিআরই আদলে পিএসসির মতো সংস্থার অধীনে এ ধরনের কার্যক্রম চালানো হবে।

আরো পড়ুন: পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যা অবশ্যই করতে হবে-ঢাবি শিক্ষক

এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, সভায় এনটিএ গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এমন সংস্থা আছে। তবে এটি এখনই গঠন করা সম্ভব হবে না। জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন সরকার আসলে এটির বাস্তবায়ন হবে। আপাতত সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে একক ভর্তি পরীক্ষার নেওয়ার বিষয়ে চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, সোমবারের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ইবি ও জবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এবার জবি ও ইবির থাকার বিষয়েই মূল আলোচনা হবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে ইউজিসি চেয়ারম্যান ও সদস্য, শিক্ষা উপমন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবও সভায় উপস্থিত থাকবেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।