প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্ববৃহৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

আসাদুজ্জামান সম্রাট: প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের গৃহীত সর্ববৃহৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে গতকাল রোববার। প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে প্রাথমিক শিক্ষার চিত্রই পাল্টে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাস হলে ‘চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) এর উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান।
প্রকল্পটির কাজ গতকাল থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়ন হবে। আশা করা হচ্ছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে একটি কার্যকর অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া মা-বাবা ও অভিবাবকদের উদ্ধুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে মিড ডে মিল কার্যক্রম বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনটি প্রধান লক্ষ্যকে সামনে রেখে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যাতে পাঠ্যসূচিতে নির্ধারিত শ্রেণীভিত্তিক ও বিষয়ভিত্তিক শিখন যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমানের উন্নয়ন, সার্বজনিনভাবে বিস্তৃত একটি সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যা শিশুদের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সক্ষম হবে। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী সুশাসন ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান রাখা ও উন্নত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পরিপ্র্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করে একটি কার্যকর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। পিইডিপি-৪ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৩১ হাজার ৮৪৮.৫৭ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ১২ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। প্রকল্প সাহায্য হিসাবে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো- বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, ইইউ, ডিএফআইডি, অস্ট্রেলিয়ান এইড, কানাডিয়ান সিডা, সুইডিশ সিডা ও ইউনিসেফ ঋণ সহায়তা দেবে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রকল্পটি বরাদ্দবিহীনভাবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রকল্পটি বরাদ্দবিহীন অনুমোদিত নতুন প্রকল্প হিসেবে এডিপিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে। গত ২২ মে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রি-প্রাইমারি এবং প্রথম হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমান পাঠ্যসূচির সংশোধন এবং সব বিদ্যালয়ে যোগ্যতাভিত্তিক টিচিং লারনিং শিক্ষা উপকরণ প্রদান ও নির্দিষ্ট সময়ে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে এক লাখ ৬৫ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়ন করা হবে। এছাড়া এক লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষকের ডিপ-ইন এড প্রশিক্ষণ প্রদান; শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রতি শিক্ষকের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান; ৫৫ হাজার শিক্ষকদের ইনডাকশন, প্রতিষ্ঠানিক, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান; ১৭শ’ শিক্ষকের এক বছর মেয়াদে সাব ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ, ২০ হাজার শিক্ষকের এক বছর মেয়াদে আইসিটি ট্রেনিং, ৬৫ হাজার শিক্ষকের লিডারশিপ ট্রেনিং; ২৫৯০ সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।