প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সুচিতে পরিবর্তন চান শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক,২৪ আগষ্ট ২০১৯:
৫+ বয়স থেকে ১১+ বয়স পর্যন্ত শিশুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা স্তর। এ স্তরে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। এ স্তরে শিশুরা অবাধ বিচরণের মাধ্যমে, খেলাধুলার মাধ্যমে, মুক্ত পরিবেশে ও প্রকৃতিকে চেনার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করে। আমাদের দেশের প্রাথমিক স্তরের শিশুরা নানা কারণে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সুযোগ পায়না। এর মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে শিশুর দৈহিক ও মানসিকতার পরিপন্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি।



প্রাথমিক স্তরের শিশুরা বিদ্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ পর্যন্ত অবস্থান করতে হয়। এতো দীর্ঘ সময় খাঁচার মধ্যে বন্দি থাকার মতো অবস্থায় ধরা বাঁধা নিয়মের মধ্যে থেকে কিভাবে শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকতে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ফাঁকি দেওয়ার বা না আসার প্রবণতা তৈরি হয়। তারা স্কুলকে ভয় পায়। যেটি ড্রপ আউট হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অনেকে।

এরই মধ্যে ২০২৩ সালের মধ্যে সারাদেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘মিড ডে’ মিল চালু খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাদের মতে এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। প্রতিদিন ব্যাপক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর জন্য খাবার প্রস্তুত করা বিশাল কর্মযজ্ঞের ব্যাপার। এতে দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।

সোশাল মিডিয়ায় এ নিয়ে নানান রকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন শিক্ষকরা। আবু জাফর মানিক নামে একজন লিখেছেন, ‘মিড ডে মিল এর পরিবর্তে কর্মঘন্টা কমিয়ে ও পিছিয়ে এক শিফট সকাল ৯-২ টা বেশি ফলপ্রসূ হবে। মিড ডে মিল ছাত্র,ছাত্রী, শিক্ষক, কমিটি সবাই রান্না ও বিতরণ নিয়ে সময় পার করবে। লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটবে।’

ওমর ফারুক লিখেছেন, মিড ডে মিল এর পরিবর্তে কর্মঘন্টা কমিয়ে দিলে, শিক্ষা উপকরন দিলে বেশি ফলপ্রসূ হবে আশা করি।

স্বপন কুমার দাশ লিখেছেন, যদি মিড ডে মিল প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রান্না করে শিশুদের খাওয়ানো হয়, তাহলে রান্না করা আর খাওয়া দাওয়ায় সারাদিন শেষ হয়ে যাবে,যা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতের প্রধান অন্তরায় হবে।

মিজান রহমান লিখেছেন, ‘শুরু ৯.০০! বিরতি মাত্র ৩০ মিনিট! শিশুদের খেলাধুলা এবং মিড ডে মিল! ৪.১৫ ক্লাস শেষ! শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কতটুকু সম্ভব ?
প্রধান শিক্ষক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক স্বরুপ দাস বলেন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যয় শিশুদের কর্মঘন্টা কমাতে হবে। কারন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায় কর্মঘন্টা। তাছারা বিকাল সাড়ে ৪ টায় বিদ্যালয় শেষ হলে শিশুদের খেলার জন্য থাকে না সময়। ফলে শারিরিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।