ঢাবিতে মুখোমুখি ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

Image

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি ও জামায়াতের চলমান অবরোধ ও হরতালে তেমন কোনো প্রভাব নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ক্লাস-পরীক্ষা। ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় প্রকাশ্যে তেমন কর্মসূচি পালন করতে পারছে ছাত্রদল।

যদিও ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসের আশপাশে কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তাছাড়া চলমান অবরোধ ও হরতালে ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ ও উদ্ধারের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ছাত্র সংগঠনের যেকোনো সময় বড় সংঘর্ষ হওয়ার শঙ্কা করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসব কারণে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে তারা।

জানা যায়, বিএনপি ও জামায়াতের চলমান অবরোধ ও হরতালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচি চোখে পড়ছে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে অবরোধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের একটি ওয়াশরুম থেকে ককটেলসদৃশ দুটি বস্তু উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া টিএসসিতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।

তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, মসজিদ গেট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, চারুকলা অনুষদ এবং সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র এবং বিজ্ঞান লাইব্রেরির ফটকে তালা ঝুলিয়ে ব্যানার-পোস্টার লাগিয়েছে ছাত্রদল। এছাড়াও অবরোধের সমর্থনে ক্যাম্পাসের আশপাশে ছাত্রদল মিছিল করেছে।

এদিকে ছাত্রদলকে প্রতিহত করতে ক্যাম্পাসে সক্রিয় রয়েছে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা পাহারায় বসিয়েছে সংগঠনটি। বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগত কাজে ক্যাম্পাসে আসলেও তাদেরকে মারধর করার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ গত ১৪ নভেম্বর ঢাবি ছাত্রদলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও অমর একুশে হল ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জসিম খান এবং ঢাবি ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক মারধর করে থানায় দিয়েছে ছাত্রলীগ।

এর আগে ৯ নভেম্বর আড্ডা দিতে এসে টিএসসিতে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছিলেন রাজধানীর দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক আহ্বায়ক সদস্য ইমরান হাসান জয়। তার আগের দিন ৮ নভেম্বর কার্জন হল থেকে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহান আরিফকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান তাকে শাহবাগ থানায় পাঠিয়ে দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান শিক্ষাবার্তাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা ঠিকঠাকভাবে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা আছে। শিক্ষকরা ক্লাস এবং পরীক্ষা নিতে যথেষ্ট আগ্রহী। শিক্ষার্থীদের সেশনজটের কবলে যেন না হয় সেদিক বিবেচনা করে আমরা ক্লাস-পরীক্ষা চলমান রেখেছি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।