ছাত্রীকে বিয়ে করা আইডিয়ালের দাতা সদস্য মুশতাকের জামিন

আইডিয়ালের দাতা সদস্য

অপহরণের অভিযোগের মামলায় রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ও বিচারপতি মো: আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।

আরো পড়ুন: ২০২৪ সালের এইচএসসি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সোহরাব হোসেন পলাশ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন আহমেদ খান।

সোহরাব হোসেন জানান, গত ২২ জুন এই আসামির নামে একটি অপহরণের মামলা করা হয়। সে মামলায় তিনি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। তবে জামিনের এই সময় পর তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

এর আগে গত ৭ জুন মুশতাকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে একাধিক ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে কথোপকথন শোনা যায়, প্রাইভেট গাড়িতে বসে অঝরে কাঁদছেন এক নারী। তাকে নামিয়ে দেয়ার আকুতি জানিয়ে বারবার বলছেন, ‘আমার ক্লাস আছে একটু পর, প্লিজ যেতে দেন। আমাকে নামিয়ে দিন এখানে। প্লিজ আমি ক্লাসটা মিস দিতে পারব না। প্লিজ।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবে আর্তনাদ আর আকুতি জানালেও মন গলেনি ওই ব্যক্তির (একজন পুরুষ)। উত্তরে তিনি (পুরুষ) ওই শিক্ষার্থীকে শাসাতে থাকেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার সঙ্গে ঠিক মতো কথা বলতে হবে। ঠিকমতো পড়ালেখা করো; লাইফ নষ্ট করতেছ।’ভিডিওতে পুরুষ কণ্ঠ শোনা গেলেও তাকে দেখা যাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিও’র ওই নারী রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর পুরুষ কণ্ঠের ওই ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীর সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যের এমন আচরণের বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় ফুঁসে ওঠেন অভিভাবকরা। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এদিকে ছাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনার জেরে ৩১ মে পরিচালনা পর্ষদের সভায় ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগমকে দিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গভর্নিং বডির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, খন্দকার মুশতাক আহমেদের বাসায় ‘পিকনিকের’ আয়োজন করেন অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। সেখানে কয়েকজন ছাত্রীকে খন্দকার মুশতাককে পরিচয় করিয়ে দেন। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করেন তিনি। বিষয়টি শিক্ষক ও অন্য ছাত্রীদের নজরে আসে। এরপর ভিডিও ভাইরাল হয়। অভিযুক্ত সদস্যকে দুই মাসের জন্য ‘নিষিদ্ধ’ করেছে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি।

এদিকে ১ জুন অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রোস্তম আলী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য ষাটোর্ধ্ব খন্দকার মুশতাক আহমেদ প্রতিষ্ঠানটির কলেজ শাখার ১৭ বছর বয়সী ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রেখেছেন। একপর্যায়ে অভিভাবকদের চাপে সম্প্রতি মেয়েটিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন মুশতাক। এটি তার তৃতীয় বিয়ে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।