চাঁদে ‌‌’রোভার প্রজ্ঞান’ কী করবে

Image

রহস্যে ঘেরা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করল ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার। প্রথম কোনো দেশ হিসেবে চাঁদের ওই অংশে নামে চন্দ্রযান-৩। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের ওই অংশে নামে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার। এরপর চাঁদের ওই অংশে বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান চালাবে চন্দ্রযানটির ল্যান্ডার বিক্রম ও রোবট প্রজ্ঞান।

রোবট প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠের গঠন বিশ্লেষণের পাশাপাশি পানির অনুসন্ধান এবং ছবি তুলে পাঠাবে বিক্রমকে। এরপর বিক্রম সেগুলো পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে।

ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান তাদের অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবহার করবে সৌরশক্তি। চাঁদের এক মাস সমান পৃথিবীর ২৮ দিন। এক চান্দ্রমাসে টানা ১৪ দিন রাত আর টানা ১৪ দিন দিনের ভাগ থাকে। ফলে চাঁদ অন্ধকারে ডুবে থাকলে কাজ করতে পারবে না ল্যান্ডার। তাই সূর্যের আলো থাকতেই ল্যান্ডার ও রোভার চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান চালাবে।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর হিসাবে ২৩ আগস্ট থেকে টানা ১৪ দিন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে দিন থাকবে। সূর্যের আলোয় ঝকঝক করবে চন্দ্রপৃষ্ঠ। ফলে সৌরশক্তি ব্যবহার করে নিজেদের কাজ চালাবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। পাশাপাশি, ভবিষ্যতের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখবে তারা।

রোবটযান প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ এবং পানির সন্ধান করবে। এই মিশনের আয়ু হবে এক চন্দ্র দিবস।

ইসরোর প্রাক্তন পরিচালক প্রমোদ কালের মতে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তাপমাত্রা মাইনাস ২৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যায়। তীব্র শীতে দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান চালানো সম্ভব নয়। এ কারণেই চন্দ্রযান অবতরণের জন্য এমন সময় বেছে নেওয়া হয়েছে, যখন চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের আলো থাকবে।

চন্দ্রাভিযানে আসলে মূল কাজটি ল্যান্ডার বিক্রমই করবে। তবে অবতরণের জায়গা থেকে সেটি নড়াচড়া করবে না। রোভার প্রজ্ঞান চাঁদের মটিতে ঘুরে বেড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে। রোভারের সঙ্গে যোগাযোগ হবে ল্যান্ডারের। এরপর ল্যান্ডার সেসব তথ্য পাঠিয়ে দেবে পৃথিবীতে।

ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানান, দক্ষিণ মেরুতে তারা পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিন অনুসন্ধান চালাবেন। চাঁদের মাটি, নুড়ি ও শিলার গঠন বিশ্লেষণ করবেন। এই অঞ্চলে বরফ ও খণিজ থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।

গত ১৪ জুলাই ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’, রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’। ল্যান্ডারটি উচ্চতায় ২ মিটারের মতো, ওজন ১ হাজার ৭০০ কেজির বেশি। আকারে ছোট রোভারের ওজন ২৬ কেজি মাত্র। এই রোভারই চাঁদের বুকে ঘুরে ঘুরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।