ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন কতটুকু দূরত্বে রাখা উচিত?

Image

আচ্ছা একবার খেয়াল করুন তো কবে আপনি শেষবার ফোনটা সুইচ অফ করেছিলেন এবং শেষ কবে ২ সেকেন্ডের জন্য হলেও ফোনটা আপনার সঙ্গে ছিল না। কী মনে করতে পারছেন না তো? পারার কথাও নয়! কারণ বর্তমানে সিংহভাগ তরুণ বয়সিদের একই অবস্থা। তারা এক মূহুর্ত ফোনকে কাছ ছাড়া করতে চান না। কাজ কথা থাকুক বা না থাকুক, ফোনের স্কিনে খুট খুট চলতেই থাকে।

কিন্তু একাধিক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, মোবাইলের প্রতি আসক্তি ধীরে ধীরে আমাদের শেষ কর দিচ্ছে। এমনকী বাড়ছে ক্যান্সারের মতো রোগের প্রকোপও। বিশেষত যারা মাথার কাছে ফোন রেখে ঘুমাতে যান, তাদের আয়ু তো চোখে পড়ার মতে কমছে। এর পেছনে মূল কারণ হল রেডিয়েশন।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মোবাইল ফোনের শরীর থেকে উৎপন্ন রেডিয়েশনের কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে দিনের পর দিন ঘুমের কোটা পূর্ণ না হওয়ার কারণে হার্ট অ্যাটাক, নানাবিধ হার্টের রোগ, হাই ব্লাড প্রেসার, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। এখানেই ভাববেন না শেষ, আরও নানাভাবে মোবাইল ফোন আমাদের শেষ করে দিচ্ছে। যেমন…

১. ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বাড়ছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, মাথার কাছে ফোন রেখে শুলে শরীরে রেডিয়েশনের প্রভাবে প্রাণকোষদের বিকাশে বাঁধার সৃষ্টি হয়।
ফলে নানাবিধ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু বছর আগে একদল অষ্ট্রেলিয়ান গবেষক এই বিষয়ে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে শরীরের কাছাকাছি বেশি সময় মোবাইল ফোন রাখলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পড়ার মতো কমে যায়। ফলে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

২. মোবাইলের অ্যালার্ম ব্যবহার বন্ধ করুন
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে মোবাইলে অ্যালার্ম সেট করার পর থেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা তা অফ করছি, ফোন থেকে ‘রেডিও ট্রান্সমিশন’ হতে থাকে।
সহজ কথায় মোবাইলের শরীর থেকে অদৃশ্য তরঙ্গ বের হতে থাকে, যার প্রভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এবার ভাবুন তো ফোনটা মাথার কাছে রেখে শুলে কী হতে পারে!

৩. সারা রাত ফোন চার্জ দেওয়া চলবে না
যদি মাঝ রাতে পুড়ে মরতে না চান, তাহলে মাথার কাছে ফোন রেখে চার্জ দেওয়া বন্ধ করুন। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘুমিয়ে পড়ার কারণে সারা রাত ধরে ফোন চার্জ হতে থাকে। যে কারণে মরাত্মক কিছু বিপদ ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন ধরুন, বেশি মাত্রায় মোবাইল ফোন চার্জ হয়ে গেলে যে কোনও সময় ব্যাটারি বিস্ফোরিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সাবধান বন্ধু, সাবধান!

ঘুমানোর সময় তাহলে কোথায় ফোনটা রাখা উচিত?
দুটো কাজ করতে পারেন। এক, ফোনটা বন্ধ করে ডাইনিং টেবিলে রেখা নিশ্চিন্তে বেড রুমে নিদ্রা যেতে পারেন। ফোন বন্ধ করতে হবে? ঘুমনোর সময় তো আর হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক করেন না। তাহলে ফোন বন্ধ রাখতে ক্ষতি কী! আর যদি একান্তই ফোনটা বন্ধ করতে আত্মা সায় না দেয়, তাহলে ফোনটা অন রেখেই দূরের কোনও ঘরে চালান করে দিন। এমনটা করলে অন্তত রেডিয়েশনের বিষ গিলে মরতে হবে না কম বয়সে।

প্রসঙ্গত, গবেষকরা লক্ষ করে দেখেছেন ঘুমনোর সময় শরীর থেকে মোবাইল ফোনটিকে যদি কম করে ৩ ফুট দুরত্বে রাখা যায়, তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে।

ফোনের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে বাঁচতে আরও কিছু উপায়:
এক্ষেত্রে যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখাটা একান্ত প্রয়োজন, তা হল…
১. ফোনে কথা বলা কমান। দীর্ঘ ফোন কল এড়ানোর চেষ্টা করুন। আর যদি একান্ত এমনটা সম্ভব না হয়, তাহলে কয়েক মিনিট পর পর এক কান থেকে অন্য কানে ফোনটা নেবেন। এক ভাবে, এক কানে দিয়ে ফোনে কথা বলবেন না।

২. সম্ভব হলে ফোনে কথা বলার সময় হেড ফোন ব্যবহার করুন। এমনটা করলে ফোনের রেডিয়েশনের প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।

৩. সিগনাল যেখানে ভালভাবে আসছে না। সেখানে ভুলেও ফোন কল রিসিভ করবেন না। এমনটা করলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। কারণ সিগনাল দুর্বল থাকার সময় ফোন থেকে বেরুনো রেডিও ওয়েভের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ব্রেনের উপর খুব খারাপ প্রভাব পড়ে।
৪. প্যান্টের পকেটে অথবা বুক পকেটে ভুলেও ফোন রাখবেন না। এতে শরীরের একাধিক অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।