আরো দুই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম : শিক্ষক সংকটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদ্বেগ

Image

মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের বার্ষিক মূল্যায়ন চলছে। আসছে বছর এ দুই শ্রেণির পাশাপাশি অষ্টম ও নবমের ক্লাসও নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী নিতে হবে।

কিন্তু, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ধলক্ষাধিক শিক্ষক পদ এখনো শূন্য। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কপালে তাই চিন্তার ভাঁজ। শূন্য পদগুলোতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

আরো পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য কড়া নির্দেশনা দিল ডিপিই

প্রসঙ্গত, এর আগে বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৬০ হাজারের বেশি শিক্ষক পদ শূন্য রেখেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়।

এনটিআরসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সর্বশেষ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

চতুর্থ ধাপে শিক্ষক যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, ৬৮ হাজার পদ শূন্য। এমপিওপ্রাপ্য এসব এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ করতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। কিন্তু মাত্র সাড়ে ৩২ হাজার পদে প্রার্থী নির্বাচন করা যায়। যেখান থেকে মাত্র ২৭ হাজার নতুন শিক্ষককে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষাংশে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়।

যাদের কেউ কেউ যোগ দিচ্ছেন, কেউ কেউ দিচ্ছেন না। নতুন শিক্ষকরা সবাই যোগদান করলেও ৪১ হাজারের বেশি শিক্ষক পদ শূন্যই থাকছে। যেগুলো শূন্য আছে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর থেকে।

২০২২ এর অক্টোবর থেকে ২০২৩ এর অক্টোবর পর্যন্ত গত এক বছরে বহু শিক্ষক অবসরে গিয়েছেন। সে হিসেবে ৩৫ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্ধলক্ষাধিক পদ শূন্য। এ সংখ্যা ৬০ হাজার বলেও ধারনা কারো কারো।

এনটিআরসিএর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মতে, মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল মাদরাসার ভৌতবিজ্ঞান, আইসিটি, জীববিজ্ঞান, চারুকলা বিষয়ের শিক্ষক পদ এ মুহূর্তে বেশি খালি আছে। আর দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভীর পদ ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড ইনসট্রাক্টরের পদ বেশি খালি আছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার বলছে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল কারিগর শিক্ষকরা। কিন্তু, বিপুল সংখ্যক শিক্ষক পদ শূন্য রেখে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জটিলতায় পড়ছেন বলে জানিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষকরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষককে অনেকটা সময় সম্পৃক্ত থাকতে হচ্ছে। তাই শিক্ষক সংকট নিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ছিলো চ্যালেঞ্জ। তা কোনোভাবে পার করা গেলেও আসছে বছর চারটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে। ফলে যতো শিক্ষক আছেন তাদের নিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া কষ্টকর হবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের সংগঠন বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও রাজধানীর বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাবুল  বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে চাহিদা দিয়েও শিক্ষক পায়নি।

অনেকে শিক্ষক পেলেও ওই শিক্ষক যোগদান করছেন না। এ পরিস্থিতিতে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। যা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জন্য চ্যালেঞ্জের। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকটের চ্যালেঞ্জ নিয়েই এ দুই শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করা যাবে। তবে দ্রুত নিয়োগ দেয়া হলে সংকট কিছুটা প্রশমিত হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরাও একটু স্বস্তি পাবেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।