আজব কান্ড-শিক্ষা অফিসারের গলায় জুতা

পিরোজপুর প্রতিনিধি,১৪ নভেম্বর:

পিরোজপুরের কাউখালিতে শিক্ষা অফিসারকে জুতার মালা পড়ানোর মামলায় উপজেলার চার প্রাথমিক শিক্ষককে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এদের মধ্যে একজনকে এক বছর ৬ মাস ও তিনজনকে ৬ মাসের করে কারাদণ্ড প্রদান করেন।

বুধবার দুপুরে পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৩ এর বিচারক মেহেদী হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার কাউখালী উপজেলার ১নং সয়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: উজ্জ্বল মিয়া, ৩৫ নং কেশরতা সুজাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বাদল হালদার, ১৪নং মধ্য সোনাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শ্যামল হালদার ও ৩৭নং শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল খান।

আদালত মো: উজ্জ্বল মিয়াকে এক বছর ৬ মাস ও অন্য ৩ জনের প্রত্যেককে ৬ মাসের করে কারাদন্ড প্রদান করেন।

এর মধ্যে সয়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: উজ্জ্বল মিয়া এক‌ই ঘটনায় বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ (৩)(ঘ) মোতাবেক চাকরি হতে বরখাস্ত হয়েছেন। একই অভিযোগে বাকি তিনজনের মধ্যে বাদল হালদার ও শ্যামল হালদার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এবং আব্দুল জলিল খান চাকরির ৫৯ বছর পূর্তি হওয়ায় বেতন ভাতা না পেয়েই অবসরে আছেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন তালুকদার স্বপন জানান, শিক্ষক মো: উজ্জ্বল মিয়ার নেতৃত্বে অপর ৩ শিক্ষক তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি জুতার মালা প্রস্তুত করে ২০০৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস কক্ষে প্রবেশ করে প্রকাশ্য দিবালোকে জোরপূর্বক সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আমিনুল ইসলামের গলায় পরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়।

তারা নিজেরাই আবার এ ঘটনা নিজেদের ক্যামেরাম্যান দিয়ে ছবি করিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সরবরাহ করে। বিভাগীয় তদন্তে ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৯ সালে অভিযুক্ত ওই ৪ শিক্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক বিভাগীয় মামলা দায়ের সহ তাদেরকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বিভাগীয় মামলার তদন্তে চার জন শিক্ষকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককেই চাকিরী থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

পরবর্তীতে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মো: আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০০৯ সালে পিরোজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি ৫০০/৫০১ ধারায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন।

উক্ত মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন।

বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন তালুকদার স্বপন ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।


Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।