অবসরের ছয় মাসের মধ্যে এমপিও শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পরিশোধের নির্দেশ

শিক্ষকদের জন্য বৃত্তি

অবসরে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০‌ শতাংশ হারে এমপিও কর্তনের বিপরীতে শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করতে বলেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার এবং বিচারপতি কাজি জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধার জন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও থেকে ১০ শতাংশ টাকা নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে জারি করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।

আরো পড়ুন: এসএসসির গণিত পরীক্ষায় প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর নয়

ওই আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, হাইকোর্ট বলেছে, এটা চিরন্তন সত্য যে শিক্ষকরা রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কতো টাকা বেতন পান, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এজন্য তাদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এই অবসরভাতা পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারে না।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা, ১৯৯৯ এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা, ২০০৫ এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী অবসর সুবিধার জন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ৪ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ২ শতাংশ টাকা কাটার বিধান ছিলো। যার বিপরীতে অবসরে যাওয়ার পর শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেয়া হতো।

তবে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন থেকে অবসর সুবিধার জন্য ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ৪ শতাংশ টাকা কাটার নিদের্শনা দেয়া হয়। তবে অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি। অতিরিক্ত টাকা কাটার আদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা অতিরিক্ত টাকা কাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন। পরে অতিরিক্ত টাকা কাটার নির্দেশনা দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ করে তারা রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন।

পরে ওই শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতনের ৬ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ কর্তনের বিপরীতে বাড়তি আর্থিক সুবিধা কেনো দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলো হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসরের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা কেনো এক বছর অথবা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। ওই রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছিলো।

রায়ের বিষয়টি রিটকারী আইনজীবী জানালেও আদেশের লিখিত কপি এখনো পাওয়া যায়নি। শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, অর্থসংস্থানের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের কপি পাওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণত আপিল করা হয়ে থাকে। এই আদেশ নিয়েও এমনটা হতে পারে বলে মত তাদের।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।