অনলাইনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা

Image

ডেস্ক,৯ অক্টোবর:
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল হওয়ার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া গুচ্ছ না কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা (ক্যাট) পদ্ধতিতে হবে তাও চূড়ান্ত হয়নি। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাটের পক্ষে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছ পদ্ধতির পক্ষে বলে জানা গেছে।

তবে এসব আলোচনা ছাপিয়ে চলতি বছরের ভর্তি পরীক্ষার শর্ত বা নিয়ম কী হবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, করোনার কারণে এইচএসসি না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবেই। তবে সামনে শীত থাকায় এত শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ কার্যকর নাও হতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছরের শুরুর দুই মাসে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শীতের পর ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চে পরীক্ষাটি নেয়া হতে পারে। তবে এতে সময় নষ্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি অপেক্ষা করতে না চায়; সেক্ষেত্রে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিত না থেকেই পরীক্ষাটি হতে পারে। অর্থ্যাৎ অনলাইনে পরীক্ষা হতে পারে। এবিষয়ে আগামী ১৫ অক্টোবর উপাচার্যদের নিয়ে ইউজিসির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯টিতে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাটে আসবে না বলে জানায়। এছাড়া ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ৯ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পাস করলেও এবরা অটোপাসের কারণে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জনে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৬০ হাজারের মতো আসনে ভর্তি হতে পরীক্ষা দেন ছয় লাখের মতো শিক্ষার্থী। এই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে। আগামী জানুয়ারিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলেও জানান তিনি।

তবে সশরীরে পরীক্ষাটি নেয়ার বিষয়টি কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। জানা গেছে, ইতোমধ্যে এইচএসসি ফল ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশের জন্য কাজ শুরু করেছে টেকনিক্যাল কমিটি। জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা পিছিয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে শীতের পর ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। তবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষার আয়োজন হলে তা হবে অনলাইনে।

এ কারণে পরীক্ষার পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে সময়ক্ষেপণ করা হতে পারে। টেকনিক্যাল কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, করোনার সংকটে বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনলাইনে নেওয়া যায় না। পরিস্থিতি ভালো হলে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে চাই। এ ক্ষেত্রে কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুচ্ছ হবে। প্রথম দুটির জন্য দুটি পরীক্ষা নেয়া হবে। আর শেষেরটির জন্য বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান এবং বিজনেস স্টাডিজ- তিনটি পরীক্ষা হবে বলে তিনি জানান।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেছেন, কোন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অ্যাডমিশন কমিটি, ডিনস কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, প্রতিটি বিষয়ই কাউন্সিল ও কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় না এলেও বাকিদের নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গুচ্ছ বলি আর ক্যাট বলি- সমন্বিতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি সময়ের দাবি। গোটা ভারতে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে আমাদেরও পারার কথা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।