নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। যদি কোনও শিক্ষার্থী এক বা দুই বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়, সে চাইলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। একবার নয়, সে দুইবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে এমন প্রস্তাব ছিল নতুন কারিকুলাম মূল্যায়ন কমিটির। যা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। অবশেষে সেই প্রস্তাবে চূড়ান্ত সায় মিলেছে।
সোমবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) এক সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসএসসিতে কেউ দুই বিষয়ে ফেল করলেও এইচএসসিতে ভর্তি হতে পারবে। কিন্তু তারা পূর্ণ সনদ পাবে না। তবে মার্কশিট পাবে। পূর্ণ সনদ পেতে পরে দুই বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি অভিভাবকরা। তারা বলছেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি ফেল করে উপরের শ্রেণিতে ওঠার সুযোগ পায়, সে পড়াশোনায় মনোযোগী হবে না।
অন্যদিকে অভিভাবকদের দাবি উপেক্ষা করে শিক্ষাক্রমে ৬৫ শতাংশ ওয়েটেজ এবং ৩৫ শতাংশ কার্যক্রমভিত্তিক ওয়েটেজ রেখে নতুন শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ফলে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে।
বৈঠকে সূত্র জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমের এসএসসি পরীক্ষায় লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ ৩৫ শতাংশ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি লিখিত মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ আর কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ রাখার সুপারিশ করেছিল। সোমবারের বৈঠকে সেটি সামান্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. মশিউজ্জামান বলেন, আজকে সভায় এনসিসিসি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে।
তিনি জানান, লিখিত মূল্যায়নে ৬৫ শতাংশ ওয়েটেজ থাকবে। আর বাকি ৩৫ শতাংশ ওয়েটেজ থাকবে কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নে। পরীক্ষার মান ও মূল্যায়নে নিরপেক্ষতা যাতে বজায় রাখা যায়, সেজন্য লিখিত মূল্যায়নে বর্তমান পাবলিক পরীক্ষার মতো খাতা ব্যবহার করা হবে। আর পরীক্ষা শেষে একযোগে ফল প্রকাশ করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
গত ৫ মার্চ গঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্য বিশিষ্ট এই উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির একাধিক বৈঠক করে করে মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব করার পর আজ সেটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেল।
নতুন শিক্ষাক্রম গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে বাস্তবায়ন করা হয়। আর চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হয় দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে একাদশ এবং ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দে দ্বাদশ শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম চালু হবে।