বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি প্রসঙ্গে যা বললেন চমক হাসান

Image

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী উন্নয়ন প্রকৌশলী, সংগীতশিল্পী ও লেখক চমক হাসান বলেছেন, আমি বুয়েটের অ্যালামনাইদের একজন হিসেবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, বুয়েটে ছাত্র-রাজনীতি বন্ধ থাকা উচিত। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র শিবির- কিছুরই দরকার নাই।
গতকাল রোববার (৩১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে চমক হাসান তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন। তার টাইমলাইনে গিয়ে দেখা যায়, দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এই পোস্টে ২০ হাজারেরও বেশি রিয়েক্ট ও কয়েক শতাধিক মন্তব্য জমা পড়েছে। এছাড়াও ১৩ শতাধিক মানুষ শেয়ার করেছে পোস্টটি।
ফেসবুক পোস্টে চমক হাসান লিখেছেন, কারণ দেখানো খুব সহজ। দুই কলামের একটা সারণি বানানো হোক। বামপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতি বুয়েটে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন উপহার দিয়েছে তার একটা তালিকা, আর ডানপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতির কারণে কী কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন, তার একটা খতিয়ান। ডানপাশে আবরার, সনি এই নামগুলোর কোনো একটার যে ভার, সেটা বামপাশের সম্মিলিত ভারের চেয়েও বহুগুণে বেশি। এরপরেও ডানদিকের তালিকায় র‍্যাগিং, অত্যাচার, চাঁদাবাজি, ক্ষমতা প্রদর্শনী, অন্যায় সুবিধাভোগ – এসবের উপাখ্যান পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যাওয়া যাবে। তাহলে ছাত্র-রাজনীতি কেন চাইবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা?

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে চমক হাসান বলেন, ডিপার্টমেন্টের প্রিয় জুনিয়র আবরারকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল, মন থেকে সেই ক্ষত এখনও মুছে যায়নি। চেনা জুনিয়রদের সাথে যত আলাপ হয়েছে সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আবরার-হত্যার ঘটনার পর যখন ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়, তারপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক শান্তিতে ছিল, আছে। কোনো যুক্তিতেই আবার ওই নরক ফিরিয়ে আনার মানে হয় না।

চমক হাসান আরও বলেন, ছাত্রলীগ না থাকলে শিবির মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এটাও মেনে নেওয়ার মতো যুক্তি না। সহজ কথা ছাত্র রাজনীতি নেই মানে কোনো সংগঠনেরই কার্যক্রম নেই। ছাত্রলীগও না, শিবিরও না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাইকেই প্রতিহত করবে। গত কদিনে সবার সাহস আর ঐক্য দেখে তাদের প্রতি এই ভরসা আমার আছে।

সবশেষে চমক হাসান তার পোস্টে বলেন, একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে, পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা যে ঐক্য দেখিয়েছে, সেটা অসাধারণ। মন থেকে ভালোবাসা আর টুপিখোলা সালাম! আমার পূর্ণ সমর্থন রইলো তোমাদের জন্য।

বুয়েট ক্যাম্পাসে সম্প্রতি দলবল নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতিসহ অন্যান্য নেতাদের প্রবেশের পর থেকে উত্তাল রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাস। ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনও করেছে তারা। অন্যদিকে, ছাত্রলীগও ছাত্ররাজনীতির দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে আজ। এর আগে সমাবেশে অবিলম্বে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফেরানোর ‘আলটিমেটাম’দেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।