স্কুল বন্ধ করে ছেলের বৌভাত: গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি টিআইবির

Image

ডেস্ক,১০ জানুয়ারী ২০২৩:

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে ২৬৫টি স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষকদের যোগ দেয়ার ঘটনা নিয়ে সমালোচনা তুঙ্গে। স্কুল বন্ধ করে প্রতিমন্ত্রীর পারিবারিক অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের যাওয়া এবং বাধ্যতামূলক চাঁদা সোনার আংটি, রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিন উপহার দেয়ার ঘটনা ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

এ ঘটনা দেশের শিক্ষাখাতকে দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ধ্বংস করার ভয়াবহ দৃষ্টান্ত মন্তব্য করে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনসহ জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় টিআইবি।

আরো পড়ুন:সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বা মহার্ঘ্য ভাতা প্রদানের কোনো পরিকল্পনা নেই : অর্থমন্ত্রী

টিআইবির পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে কুড়িগ্রামের তিন উপজেলার ২৬৫ বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকদের যোগদান, বাধ্যতামূলক জনপ্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা তুলে সোনার আংটি, রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিন উপহার দেয়া ও প্রতিমন্ত্রীর তা গ্রহণের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলে উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীর দৃশ্যত নির্দেশনামূলক নিমন্ত্রণে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের যোগসাজসে বিদ্যালয় বন্ধ রেখে বৌভাতে সোৎসাহে বা বাধ্য হয়ে অংশগ্রহণের এ ঘটনা দেশের শিক্ষাখাতকে দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ধ্বংস করার এই ভয়াবহ দৃষ্টান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রীসহ সব জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

ণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে টিআইবি আরও বলছে, রোববার কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলার সব বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকেরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে অংশ নেন। বিষয়টিকে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষকতা পেশা ও শিক্ষার্থীর প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার অরুচিকর লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিকশিত দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের হাতে জিম্মি অবস্থার চরম উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত কুড়িগ্রামের এ ঘটনা। প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না। টিআইবি মনে করে, প্রধান শিক্ষকরা নিজেদের তিনদিন সংরক্ষিত ছুটির সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত আমন্ত্রণের বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতির জন্য সংরক্ষিত এ ছুটি এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহারের সুযোগ আছে কি-না সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ব্যাখার প্রয়োজন রয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এতোগুলো বিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে কারও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও বাধ্যতামূলক জনপ্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে উপহার দেয়ার এই ঘটনা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সক্রিয় যোগসাজস না থাকলে কোনো অবস্থাতেই ঘটতে পারতো না, তা-ও খুব সহজেই বোধগম্য। প্রতিমন্ত্রী ও তার পরিবার এই উপহার গ্রহণ করে যে ন্যাক্কারজনক মানসিকতার পরিচয় দিলেন, তার ব্যাখা কি? আর এই পুরো ঘটনার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কি? সরকারের উচিত জনগণের, বিশেষ করে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতার্থে তা ব্যাখাসহ প্রকাশ করা।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।