অনলাইন ডেস্ক,২০ ফেব্রুয়ারী:
চীনে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বুধবার রাতারাতি আরও ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। এর ফলে এই ভাইরাসে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২১১৮ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে এশিয়ান সংবাদ মাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
এছাড়া বুধবার ইরানে করোনায় আক্রান্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মধ্যপ্রচ্যের কোনও দেশে এই ভাইরাসে এটিই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশরে করোনা রোগী সনাক্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে চীনা স্বাস্থ্য কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, বুধবার দেশটিতে নতুন করে আরও ৩৯৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭৪,৫৭৬য়ে গিয়ে দাঁড়ালো।
তবে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল উহান প্রদেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে বলে দাবি করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। বুধবার সেখানে করোনা আক্রান্ত ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ছিলো ১১৬ জন। করোনাভাইরাসে উহানে সবমিলিয়ে মারা গেছে ১৫৮৫ জন। বুধবার প্রদেশেটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে আরও ৩৪৯ জন।
চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজার ২৬২ জন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসে হংকং ও ইরানে দুইজন করে চারজন এবং তাইওয়ান, জাপান, ফিলিপাইন, ফ্রান্সে একজন করে মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম দশা চীনা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। শুধু চীন নয়, বিশ্ব জুড়ে বড় বড় গবেষকরা নেমে পড়েছেন নোভেল করোনা রুখে দেওয়ার ওষুধ তৈরিতে। কিন্তু এখনও এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।
ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসকে বিশ্ববাসীর জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক ইথিওপিয়ার টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেছেন, এ ভাইরাসটি ‘যেকোনো সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপের চেয়েও শক্তিশালী’হতে পারে।