১৩ বছর পর স্ত্রীর মর্যাদা পেলেন শিক্ষিকা

১৩ বছর পর স্ত্রীর মর্যাদা

পাবনা প্রতিনিধি,২১ এপ্রিল, ২০২৩: বিয়ের ১৩ বছর পর স্ত্রীর মর্যাদা পেলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কালীবাড়ির বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা কার্তিক চন্দ্র পালের বাড়িতে স্ত্রীর দাবিতে অবস্থানের তিন দিন পর বৃহস্পতিবার তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

যেভাবে ১৩ বছর পর স্ত্রীর মর্যাদা পেল

১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দেওয়া হলফনামা থেকে জানা যায়, কার্তিক এবং ওই নারী নিকটাত্মীয় হওয়ায় একে অপরের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এর পর ২০১০ সালের মার্চ মাসে তারা সনাতন ধর্মানুযায়ী কালীমন্দিরে গিয়ে মালাবদল করে পুরোহিতের দ্বারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে ১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বিষয়টি হলফনামা করিয়ে নেন।

এর পর তারা যার যার পেশায় ব্যস্ত থাকলেও নিয়মিত মেলামেশা চালিয়ে যান। বিয়ের এক বছর পর থেকে ওই নারী কার্তিককে তার বাড়িতে নিতে বললে কার্তিক নানান তালবাহানা শুরু করেন। এভাবে বিভিন্ন অজুহাতে কার্তিক পার করেন ১৩ বছরের অধিক সময়। কোনো উপায় না পেয়ে ওই নারী গত মঙ্গলবার কার্তিকের বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা আদায়ে অবস্থান নেন।

বিষয়টি জানতে পেরে ওই নারীর বাবা-মা ও দুই মামা কার্তিকের বাড়িতে আসেন। তাদের অবস্থান জানাজানি হলে স্থানীয় সনাতন নেতারা বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিলে কার্তিক গা ঢাকা দেন। এর পর বুধবার সন্ধ্যায় কার্তিক বাড়ি ফিরলে সনাতন নেতারা তাকে ওই নারীকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে বললে কার্তিক তাকে অস্বীকার করেন। এর পর ওই নারী তার কাছে থাকা হলফনামা স্থানীয়দের দেখান।

রাতভর তারা কার্তিককে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশকে খরব দিলে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতিতে কার্তিক ওই নারীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে স্বীকার করলে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে তাদের পুনরায় সনাতন ধর্মানুযায়ী বিয়ে দেন।

কার্তিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া স্কুলশিক্ষিকা বলেন, স্থানীয়রা আমাকে আমার সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের পুনরায় বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ওই নারী কার্তিকের বাড়িতে অবস্থানের পর থেকেই ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। স্থানীয় সনাতন নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি সামাজিক সমাধানের চেষ্টা চলছিল। আজ বৃহস্পতিবার তাদের সামাজিকভাবে একত্রিত করে দেওয়া হয়েছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।