ঢাবি শিক্ষিকা সামিয়া রহমানের পদাবনতির আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক,৪ আগষ্ট ২০২২: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষিকা সামিয়া রহমানকে পদাবনতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে সব সুযোগ-সুবিধাসহ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সকল সুযোগ সুবিধাসহ তাকে পদ ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে সামিয়া রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম।

এর আগে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানকে পদাবনতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সামিয়া রহমানের গবেষণা জালিয়াতি সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, গঠিত ট্রাইব্যুনালের নথিসহ সব কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে।

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তির সুপারিশ করা হয়নি।

পরে বিষয়টি নিয়ে আইনি সুপারিশ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। প্রায় ৩ বছর পর সিন্ডিকেটের সভায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করা হয়। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির ‘প্রমাণ পাওয়ায়’ সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক পদাবনতি করা হয়। একইসঙ্গে তার গবেষণা সহযোগী অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকেও দুই বছর একই পদে থাকতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভা। পরে সেসব সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।