মাল্টিমিডিয়ার সুবিধার বাইরে চুয়াডাঙ্গার ৮৫ ভাগ বিদ্যালয়

 চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ পাঠদানের সর্বাধুনিক পদ্ধতি মাল্টিমিডিয়া সুবিধা এখনো পৌছায়নি জেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের হালনাগাদকৃত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায়  ৪৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। দামুড়হুদায় ১১৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এরমধ্যে ১৭টিতে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া সুবিধা। সে হিসেবে বিভাগের ৮৫ শতাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও মাল্টিমিডিয়া সুবিধার বাইরে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পাঠদান পদ্ধতিকে আরও যুগোপযোগী ও আনন্দময় করতে এবং প্রাথমিক স্তর থেকে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতি চালু করা হয়। এছাড়া চার বছর আগে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় চালু করা হয় ই-বুকসেবা। পাঠ্যপুস্তকের বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করতে এরইমধ্যে চালু হয়েছে ডিজিটাল কনটেন্ট। অথচ তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা উপকরণের অভাবে জেলার দামুড়হুদা উপজেরার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মাল্টিমিডিয়াভিত্তিক এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, শুধু  চুয়াডাঙ্গা  নয়, দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বড় অংশে এখনও মাল্টিমিডিয়াভিত্তিক পাঠদান চালু করা সম্ভব হয়নি। কিছু বিদ্যালয়ে এখনও বিদ্যুৎসেবা পর্যন্ত পৌঁছেনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক স্বরুপ দাস জানান, যেসব বিদ্যালয়গেুলোতে ল্যাপটপ পৌছিয়েছে তার বেশিরভাগই খারাপ হয়ে পড়ে আছে। কোন কোন বিদ্যালয়ে প্রজেক্টর পেলেও ল্যাপটপ এখনও হাতে পাইনি। তাছারা যেসব ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে  তা খুবই দূর্বল প্রকৃতির ল্যাপটপ। একটু ব্যবহার করলেই হ্যাঙ্গ হয়ে যায়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে সারাবিশ্বেই শিক্ষা ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে কম্পিউটারভিত্তিক মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার। জাতীয় শিক্ষানীতিতেও শিক্ষা ব্যবস্থায় কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘ গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়ও (এসডিজি) সবার জন্য টেকসই গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অথচ চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ৮৫ শতাংশ বিদ্যালয়ে এখনও কম্পিউটার পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এ অবস্থাকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছেন শিক্ষাখাতের বিশেষজ্ঞরা।

তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে কম্পিউটার কিংবা মাল্টিমিডিয়াভিত্তিক পাঠদান খুবই প্রয়োজনীয়। আমাদের বিদ্যালয়টি ২জন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কম্পিউটার কিংবা মাল্টিমিডিয়া কোনো ধরনের উপকরণই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় বরাবর যোগাযোগ করা সত্বেও কোনো ধরনের সাড়া মেলেনি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।