মাত্র ১৫ মিনিট সময় এগিয়ে বদলে ফেলুন জীবন

আমরা সব সময় মুদ্রার একটি পিঠ দেখেই অভ্যস্ত। মুদ্রার ওই পিঠে কী আছে কখনো খেয়াল করিনা। আর যদিওবা করি সেটাকে নিছক দৈব ভেবে এড়িয়ে চলি। অথচ এই দৈবকে দৈনন্দিন করা গেলে যে আমাদের চারপাশের দুনিয়া বদলে যেতে পারে, সেটা কখনো খেয়াল করেছি?

এই ধরুন আপনি প্রতিদিন অফিসের জন্যে বের হোন সকাল ৮ টায়। আর আপনার অফিস হচ্ছে সকাল ৯ টায়। ফলে প্রতিদিন আপনি হন্তদন্ত হয়ে ছুটেন অফিস পানে। কোনোদিন ভাগ্য ভালো হলে ১৫ মিনিট আগেই পৌঁছে যান। আর বেশিরভাগ সময়ই আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শাপশাপান্ত করে ১০ মিনিট লেটে অফিসে পৌঁছান।

ফলে সেখানে কাজ শুরুর আগেই আপনি ভুল দিয়ে শুরু করলেন অর্থাৎ আপনি দিনের শুরুতেই নেগেটিভ মার্কিংয়ে চলে গেলেন। আর সারাদিন তো পরেই রইলো, সেখানের ভুল আপনার নেগেটিভের বোনাস হিসেবে কাজ করবে। অথচ আপনি যদি জাস্ট ১০ মিনিট আগে পৌঁছাতে পারতেন তবে আপনার কাজের আউটপুট হতো দুর্দান্ত। আপনি দিনের শুরু করতে পারতেন প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। ফলে দিনের পরবর্তী কাজে আপনার পজিটিভ দিকে আরো কিছু পজিটিভ ব্যাপার যোগ হতে পারত।

তাই এবার একটু চিন্তা করুন, আপনি যদি আপনার প্রথাগত সময় থেকে মাত্র ১৫ মিনিট আগে আপনার দিনের কাজ শুরু করতে পারেন, দেখবেন আপনার দিন শুরু হবে অনেক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। পথে হবে না দেরি। যে বাসের জন্যে আপনি লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন আজ ১৫ মিনিট আগে এসে দেখছেন বাসই লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! তাই অফিসে গিয়ে দিতে হবে না নিত্যদিনের অজুহাত। যেটা আপনার ইম্প্রেশন বাড়াবে অনেকগুণ। একই সঙ্গে এই আত্মবিশ্বাস আপনার অফিসের রেগুলার কাজের দক্ষতা বাড়াবে। আর এর সুদূর প্রসারি ফলাফল পাবেন পরবর্তী ইনক্রিমেন্টে।

তাছাড়া এই পদ্ধতিটি আপনি আপনার দৈনন্দিন অন্যান্য কাজেও প্রয়োগ করতে পারেন। যেমন, আপনি মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে দেখেন সবাই মসজিদের সামনের দিকে বসে আছেন। আপনি দেরি করে যাওয়ার কারণে অনেক সময় পেছনের দিকে কিংবা রাস্তায় কার্পেট বিছিয়ে নামাজ পড়তে হচ্ছে। তাই এখানেও যদি আপনি আপনার নিজের নির্ধারিত টাইমের ১৫ মিনিট আগে যেতে পারেন দেখবেন সামনের কাতারেই অনেক জায়গা আছে। কারণ মানুষের কমন অভ্যাস হচ্ছে মসজিদে একবারে শেষ সময়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

সুতরাং আপনার সকল কাজ আপনি ১৫ মিনিট আগে থেকে শুরু করুন। দেখবেন কোনো কাজই আর অগোছালো হবেনা। তা সেটা সকালের নাস্তা বানানোর সময় হোক কিংবা বাইরে কোথাও বেড়ানোর জন্যে বের হওয়ার সময় হোক। একটু আগে থেকে শুরু করলে দেখবেন জীবন কতটা সহজ।

কোনো এক প্রোগ্রামে যাবেন, তার নির্ধারিত সময়ের ভেতর যদি পৌঁছাতে না পারেন তবে ব্যাপারটা কতটা বিব্রত। হয়তো সেটা বিয়ের দাওয়াতই হোক না কেন। আপনি পৌঁছে দেখলেন সকল অতিথি বের হয়ে যাচ্ছে, তখন বিষয়টা এমন দাঁড়ায় না আপনি শুধু সেখানে ভোজে অংশ নিতেই গিয়েছেন। সামাজিক মেলামেশা থেকে আপনি কিন্তু বঞ্চিতই রইলেন। তাই সময়ের সঙ্গে চলতে হলে আপনাকে সময় থেকে আগে ছুটতে হবে। তাহলেই দেখবেন আপনার দুনিয়া কীভাবে বদলে গেছেন। আর একই সঙ্গে বদলে গেছে আপনার চারপাশের মানুষগুলোও। কেননা তখন তারা আপনাকে দেখবে অন্য দৃষ্টিতে, শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে যদি আপনি সকল কাজ সময়মত করে থাকেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।