ভর্তিযুদ্ধ: সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী

২০১৭ শিক্ষাবর্ষে সারাদেশের ৩১৬টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে থাকা ৬৭ হাজার ৩৯টি আসনের বিপরীতে ভর্তির আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৮৬ টি। ফলে ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৪৭ জন শিক্ষার্থী অর্থাৎ মোট আবেদনের ৭৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারি স্কুলের ভর্তির আবেদনপত্র ছাড়া হয় ১ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে। আর শেষ হয় ১২ ডিসেম্বর সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রাজধানী বাদে সারাদেশের সরকারি স্কুলে ৫৬ হাজার ৪৪৪টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮২টি। এ হিসেব অনুযায়ী প্রতি আসনের বিপরীতে প্রায় ৫ জন শিক্ষার্থী।

আর রাজধানীর ৩৮ সরকারি স্কুলে ১০ হাজার ৫৯৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৭১ হাজার ৩০৪টি। এ অনুযায়ী, প্রতি আসনের বিপরীতে ৭ জন শিক্ষার্থী। ফলে ভর্তি যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

মঙ্গলবার মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো. এলিয়াছ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সারা দেশের ৩৩৫টি সরকারি হাইস্কুলের মধ্যে এবছর ৩১৬টি স্কুল অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রমের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় বাকি ১৯টি স্কুল অনলাইন আবেদনের বাইরে রয়েছে। সেগুলোতে ম্যানুয়ালি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। স্বচ্ছভাবে ভর্তি পরীক্ষা ও লটারি সম্পন্ন করতে মঙ্গলবার সভা করে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। তার ভর্তি কার্যক্রম মনিটরিং করবে।’

২০১৬ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের ১৭৫টি সরকারি হাইস্কুলে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি আবেদনের আাওতায় আনা হয়। রাজধানীর স্কুলে ১০ হাজার আসনের বিপরীতে প্রায় ৭৫ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল।

মাউশি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয়-নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে। আর ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে শেষ করতে মাউশি পৃথক মনিটরিং টিম গঠন করবে।

রাজধানীর ৩৮টি সরকারি হাইস্কুলকে গত বছরের মতো ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ এই তিন গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩টি স্কুলে ফিডার শাখা রয়েছে। প্রতিটি ভাগের যে কোনও একটি স্কুলে আবেদন করা যাবে।

‘ক’ গ্রুপের ১৩টি স্কুলের ৩ হাজার ৯৯১টি আসনের বিপরীতে ২১ হাজার ৮৩০ টি, খ’ গ্রুপের ১৩টি স্কুলের ২ হাজার ৯৬৯টি আসনের বিপরীতে ২৬ হাজার ৫৬৭টি ও ‘গ’ গ্রুপের ১২টি স্কুলের ৩ হাজার ৬৩৫টি আসনের বিপরীতে ২২ হাজার ৯০৭টি আবেদন জমা পড়েছে।

ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও সরকারি হাইস্কুলে মোট আসনের ৫৯ শতাংশ কোটায় ভর্তি করা হবে। এগুলো হচ্ছে, স্কুল এলাকা কোটা ৪০ শতাংশ, সরকারি প্রাইমারি স্কুল, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী কোটা। কোটার বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সরকারি হাইস্কুলে পড়ার জন্য  কঠিন লড়াই করতে হবে।

পরীক্ষা সূচি: প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে। ২৪ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় দিবা শাখার (ফিডার শাখাসহ) এবং একই দিন দুপুর ২টায় প্রতিটি স্কুলে দিবা সিফটে (ফিডার শাখাসহ) লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

লটারির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির পক্ষ্য থেকে পৃথক টিম গঠন করা হবে। তাদের উপস্থিতিতে লটারি সম্পন্ন হবে।

রাজধানীর ‘ক’ গ্রুপের স্কুলের ২য়-৫ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা ২৪ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় এবং ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।

‘খ’ গ্রুপের স্কুলের ২য়-৫ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা ২৫ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১০টায় এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।

‘গ’ গ্রুপের স্কুলের ২য়-৫ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টায় এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকার বাহিরের স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি তারিখ নির্ধারণ করবে।

পরীক্ষার বিষয় ও মানবণ্টন: দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ ও ২০ নম্বরের গণিত মোট  ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা।

চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩০ ও ৪০ নম্বরের গণিত মোট ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই ঘণ্টা।

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।