প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি গঠনে অনিয়ম, প্রধান শিক্ষকদের ক্ষোভ

Image

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নীতিমালা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদস্য হিসেবে থাকার কথা। তবে এই উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে একজন সহকারী শিক্ষককে সদস্য করা হয়েছে।

ওই শিক্ষকের নাম মুহাম্মদ রানা আসিফ ওসমান। তিনি উপজেলার মানশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে রয়েছেন।

মূলত তার পদবি সহকারী শিক্ষক। বেতন ভাতাও তুলছেন সহকারী শিক্ষকের। রানা আসিফ ওসমান সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র।

আরো পড়ুন:আবারও পেছাল প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা

এ ঘটনায় উপজেলার একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা একে অপরকে দায়ী করছেন।

একাধিক প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপজেলায় অসংখ্য প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। অথচ স্বজনপ্রীতি রক্ষায় নিয়ম ভঙ্গ করে একজন সহকারী শিক্ষককে ওই কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অসম্মানের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৬ সদস্য বিশিষ্ট মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপদেষ্টা, উপজেলা চেয়ারম্যান কমিটির চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান, দু’জন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হবেন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিব।

এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন উপজেলা প্রকৌশলী, পৌরমেয়র, একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, দু’জন শিক্ষানুরাগী, একজন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর ও একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

তবে নিয়মানুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদস্য হওয়ার কথা থাকলেও এই কমিটিতে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষককে সদস্য করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান খান  শিক্ষাবার্তাকে গত ৯ নভেম্বর মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি অনুমোদন দেন।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) তিনি বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্থানীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি গঠন করেন। সেখান থেকে যে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে আমি শুধু সেটা অনুমোদন করেছি। রানা আসিফ সহকারী শিক্ষক। তবে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকায় আমরা তাকে প্রধান শিক্ষকই মনে করি। নিয়মানুযায়ী এমনটা মনে করা যায় কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে সংশোধন করা হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, রানা আসিফ পদের দিক থেকে সহকারী শিক্ষকই। তবে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। সরকার চলতি দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকদের আর সহকারী হিসেবে ফিরিয়ে নিবে না হয়তো। নিয়মের ব্যত্যয় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সুপারিশে রানা আসিফকে সদস্য করা হয়েছে।

ইউএনও ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, রানা আসিফ যে সহকারী শিক্ষক এটা জানা ছিল না। শিক্ষা কর্মকর্তাও এটা বলেননি। বিষয়টা নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব।

উল্লেখ্য, শিক্ষক মুহাম্মদ রানা আসিফ স্থানীয় সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের ভাগ্নে হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।