তুরস্ক সিরিয়ায় ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত প্রায় ২০০, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

Image

ডেস্ক, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩:

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে। তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী ঐ এলাকায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৭৬ জনের। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে এ ভূমিকম্প হয়। কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসেও।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্কে ভূমিকম্পে অন্তত ৭৬ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে তুরস্কের মালাটিয়ায় অন্তত ২৩, সানলিউরফার ১৭, দিয়ারবাকিরে ছয় এবং ওসমানিয়ে পাঁচ জনের নিশ্চিত মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে দেশটিতে অন্তত ৪৪০ আহত হয়েছেন।

সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে দেশটির সীমান্ত এলাকাজুড়ে অন্তত ১০০ জন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি শুরু হয়ে প্রায় এক মিনিট স্থায়ী হয়। এর উৎপত্তি গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার (১১ মাইল) গভীরে।

অন্যদিকে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স (জিএফজেড) বলছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কাহরামানমারাসের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরে। সুনামির সম্ভাবনা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে ইএমএসসি মনিটরিং সার্ভিস জানিয়েছে।

ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও দেশটির অন্যান্য শহরের পাশাপাশি পুরো অঞ্চল-জুড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে তুষারে ঢাকা রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়েছেন ভূমিকম্পের তীব্রতায়। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে আর এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপে বহু মানুষ আটকা পড়েছে বলেও খবর আসছে।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হতাই, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাটিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস-এই ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গণমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে কাহরামানমারাস শহরে ধসে পড়া ভবনগুলোর চারপাশে লোকজন জড়ো হয়ে জীবিতদের ও তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজ করছেন।

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সানলিউরফার গভর্নর সালিহ আয়হান টুইটারে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে সেখানে অনেক ভবন ধ্বংস হয়েছে। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে আলেপ্পো প্রদেশে বহু ভবন ধসে পড়েছে। আর দেশটির হামা প্রদেশের বেসামরিক পরিষেবার একটি সূত্র রয়টার্সকে বলছে, সেখানেও বেশকিছু ভবন ধসে পড়েছে।

ভূমিকম্পে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক, লেবাননের রাজধানী বৈরুত এবং বন্দর শহর ত্রিপোলিতে ভূমিকম্পের কারণে লোকজন দৌঁড়ে রাস্তায় বের হয়ে যায়। তাদের ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে আশঙ্কায় কেউ কেউ নিজেদের গাড়ি সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।