ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি চাকুরেদের বেতন নির্ধারণ । নেই কোন জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে করে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি স্বচ্ছ ও নির্ভুল ডাটাবেইজ তৈরি হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া কে কত বেতন পাবেন সেটা অনলাইনেই দেখা যাবে। এদিকে খুব শিগগিরই অষ্টম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। নতুন স্কেল অনুযায়ী কার কত বেতন হবে এটার জন্য ক্যালকুলেটর চেপে বের করার প্রয়োজন হবে না। কিংবা কাগজ কলম নিয়েও হিসাব করতে বসতে হবে না। নতুন বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশের পর অর্থবিভাগের ওয়েবসাইটে একটি নতুন পেজ খোলা হবে। যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের পদবি, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, চাকরির গ্রেড, কর্মস্থল ইত্যাদি তথ্য প্রদান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন নির্ধারিত হবে। পরে এর একটি প্রিন্ট কপি হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তারা সংরক্ষণ করবেন। এতে বেতন-ভাতা নির্ধারণ ও হিসাব-নিকাশ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ, স্বচ্ছ ও নির্ভুল হবে বলে মনে করে অর্থবিভাগ। বর্তমানে এ কাজের জন্য সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে বলে জানা গেছে। অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, এ বিভাগের সচিব মাহাবুব আহমেদ অর্থমন্ত্রীকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পাঠালে তিনি তা অনুমোদন করেছেন। বর্তমানে সরকারের হাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কমপ্লিট কোনো ডাটাবেইজ নেই। এতে বেতন-ভাতা খাতে প্রতি বছর জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হয় অনুমানের ওপর নির্ভর করে। ফলে অনেক সময় অর্থ বিভাগ নানা জটিলতায় পড়ে। অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেতন-ভাত নির্ধারণ করলে একটি স্বচ্ছ ও শক্তিশালী ডাটাবেইজ তৈরি হবে। বাজেট বরাদ্দ রাখতে সুবিধা হবে। যা পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনকেও প্রদান করা যাবে। এই ডাটাবেইজ ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রেও কাজে লাগবে। জানা গেছে, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নতুন বেতন স্কেল কার্যকর হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। সেখান থেকে অনুমোদন পেয়ে তা অর্থ বিভাগে ফিরে আসে। এতে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি হয়। তথ্যবিভ্রাট হলে ফরম পূরণ করতে হয়। এতে একদিকে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ হয়। পাশাপাশি অনেকেই ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হন। আর অনলাইন বা ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ ধরনের ভোগান্তি বা হয়রানির কোনো সুযোগ থাকবে না। এর পাশাপাশি দেশের যেসব দুর্গম এলাকায় এখনো ইন্টারনেট পৌঁছায়নি সেসব এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে বেতন-ভাতা নির্ধারণের।

এদিকে অর্থবিভাগের একটি সূত্র জানায়, অষ্টম পে-স্কেলের গেজেট প্রকাশের প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন বিভাগ একটি সারমর্ম তৈরি করছে। যা অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা। তিনি দেশে ফেরার পর ওই সারাংশ অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হবে। তার অনুমোদন পেলে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এরপর গেজেট প্রকাশ করে তা কার্যকর করা হবে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরও প্রায় দুই মাস লেগে যেতে পারে বল মনে করে অর্থবিভাগ।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।