ডিএমসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী : ভালোবাসার বন্ধনে ভরে ওঠে ক্যাম্পাস

সকাল থেকেই চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে হাসপাতাল ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক মিলনমেলায়। কেউ এসেছেন লাঠিতে ভর করে, কেউ ছেলেমেয়ের হাত ধরে, কেউবা নতুন সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে প্রিয় ক্যাম্পাসে। তাদের উপস্থিতিতে আনন্দ-উল্লাস এবং ভালোবাসার বন্ধনে ভরে ওঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণ। সবার মুখে ছিল হাসি আর বুকজুড়ে ছিল প্রিয় বিদ্যাপীঠ ও বন্ধু-বান্ধবের জন্য ভালোবাসা।

তাই তো তারা অনেকেই আষাঢ়ের মিষ্টি সকালে মেডিকেল কলেজ চত্বরে দাঁড়িয়ে অতীত দিনের কথা মনে করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। ব্যস্ততায় সময়মতো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না অনেকেই। আবার কলেজ থেকে পাস করার পর সহপাঠীরা কে কোথায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, সে খবরও রাখা হয় না; কিন্তু ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এসে সেই পুরনো দিনগুলোই যেন আবার নতুন হয়ে ধরা দিয়েছিল কলেজের পুরনো শিক্ষার্থীদের কাছে।

স্মৃতি হাতড়ে তারা চলে গিয়েছিলেন কলেজের ধরাবাঁধা শিডিউলের ক্লাস, পরীক্ষা আর কঠিন রুটিনের ক্লাসের ফাঁকে আড্ডার দিনগুলোতে। তরুণ বয়সের সেই বাঁধভাঙা দিনগুলোর কথা আর গল্পে মেতে ওঠেন সবাই। উৎসবমুখর পরিবেশে শনিবার উদযাপিত ডিএমসির ৭০ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের চিত্র ছিল এমনই।

অনেকেই আষাঢ়ের মিষ্টি সকালে মেডিকেল কলেজ চত্বরে দাঁড়িয়ে অতীত দিনের কথা মনে করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। কেউ আবার দীর্ঘদিন পর সহপাঠীর দেখা পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন তাকে। বলেন, কেমন আছিস বন্ধু? অনেকদিন পর বন্ধুটিকে কাছে পেয়ে প্রিয় ক্যাম্পাসকে হালের নতুন ফ্যাশন সেলফি হিরিকও বাদ যায়নি। সারাদিনই চলে এমন করে কুশলবিনিময়। কেউ তাদের ঠিকানা-মোবাইল নম্বরটি বিনিময় করেন। কেউ চলে যান বন্ধুদের সঙ্গে তাদের প্রিয় হোস্টেলে নিজের জন্য বরাদ্দ রুমটিতে পুরনো স্মৃতি খুঁজতে। হোস্টেলের ক্যান্টিনে পুরনো বন্ধু-বান্ধবীকে সঙ্গে করে সেই পুরনো দিনের মতো এক কাপ চা খেতে চলে যান অনেকে।

অনুষ্ঠানে কেউ বর্ণনা করেন নিজ ছাত্রজীবনের স্মৃতি। নানা অনুষ্ঠান ও আয়োজনে পুনর্মিলনীর দিনে এমনই এক ভিন্ন দিন কাটিয়েছেন ডিএমসির ছাত্র ও চিকিৎসকরা। বাদ পড়েননি বর্তমান নবীন শিক্ষার্থীরাও। সাবেক ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে তাদেরও একটি নতুন দিন কাটে প্রিয় ক্যাম্পাসে। আড্ডা, গল্প, খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গান, উষ্ণ ভালোবাসায় নবীন-প্রবীণ সবাই মহাআনন্দে কাটান এ রকম একটি দিন। সংবর্ধনা, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফিল্ম শোসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিকেল পর্যন্ত এই বর্ষপূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তারা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জুনায়েদ খান জাগো নিউজকে বলেন, তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চাকরি করছেন। কিন্তু পড়ালেখা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে। এ কলেজ থেকেই তিনি ১৯৯৪ সালে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। তাই পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার জন্যই আজ প্রিয় ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন। এসে খুবই আনন্দিত বলেও জানান।

এ মেডিকেল থেকে পড়াশোনা করা ডা. মাসুম বিল্লাহ বর্তমানে এ কলেজে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগে দায়িত্বরত। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আজকের দিনটা অন্যসব দিনের মতো নয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন বন্ধ-বান্ধবীর সঙ্গে দেখা হচ্ছে। যারা একসঙ্গে পড়ালেখা করে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন মেডিকেলে কর্মরত তাদের অধিকাংশই এসেছেন। তাদের সঙ্গে কুশলবিনিময় আর আড্ডা দিতে খুব মজা লাগছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।