কেন বিরাট কোহলিকেই করতে হলো ম্যাচের শেষ ওভারটা।

অনলাইন ডেkohaliস্ক : যেন পেয়েও পাওয়া হলো না ফাইনালের স্বাদটা! আর একটু হলেই হয়তো ভারত দলকে ছিটকে পড়তে হতো না। এমন হাজারও প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের মনে।

 

তবে এতসব প্রশ্নের মাঝেও যে প্রশ্নটি সবচেয়ে জোড়ালে হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো- কেন বিরাট কোহলিকেই করতে হলো ম্যাচের শেষ ওভারটা।

আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেষ ওভারটা কোহলিকে করতে দেখে ঝট করে একসঙ্গে দুটো অনুভূতি হল। এই বিরাট সিদ্ধান্তটা কি ধোনির স্ট্র্যাটেজিক্যাল? না, কপালের নামে ছেড়ে দেওয়া! নাকি এমন প্রেশার কুকার পরিস্থিতিতে ধোনির বারো বছর বয়সের ধূসর স্মৃতিও মনে পড়ায় সেই রাস্তায় হেঁটে ভারতের আর একটা রূপকথার জয়ের আশা?

হ্যাঁ, তিরানব্বইয়ের হিরো কাপ সেমিফাইনালে ইডেনে সেই দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ওভারে শচীন টেন্ডুলকরের বল করার কথাই বলা হচ্ছে। সেই সময় রাঁচির কোনও এক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তো বারো বছরের কিশোর।

কিন্তু সে দিনের ইডেন আর এ দিনের ওয়াংখেড়ের তফাত আকাশ-পাতাল। ইডেনে পিচ স্লো ছিল। স্লো বোলারকে মারা অনেক কঠিন ছিল। তা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার যত দূর মনে পড়ছে সাতটা উইকেট পড়ে গিয়েছিল। টেলএন্ডাররা ব্যাট করছিল। আর এখানে ওয়াংখেড়ের পিচ পুরোপুরি ব্যাটিং-বন্ধু। ছোট বাউন্ডারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাত্র তিন উইকেট পড়েছিল। ক্রিজে জমে যাওয়া দু’জন স্পেশ্যালিস্ট ব্যাটসম্যান।

তাই শচীনের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে ছয়ের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকার তিনের বেশি তুলতে না পারা আর কোহালির শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেতার বাকি আট রান আটকানোর স্বপ্ন দেখা— দু’টোর মধ্যে কোনও তুলনাই আসে না।

বিশ্ব টি-টোয়েন্টি সেমিফাইনালের শেষ ওভার কোহলিকে দেওয়ার মধ্যে ধোনির ওই দু’টো ইউএসপিরই যেন চূড়ান্ত অভাব ফুটে উঠল বৃহস্পতি-রাতে।

যদি পার্টটাইম বোলার এনে ব্যাটসম্যানকে ভড়কে দেওয়াই ধোনির পরিকল্পনা ছিল, তা হলে রায়না নয় কেন? কোহালি এ দিন আগে প্রথম ডেলিভারিতে জমে যাওয়া চার্লসকে আউট করেছিল বলেই কি শেষ ওভারে ওকে আনা?

আসলে এদিন ধোনির বোলারদের ওভারের হিসেব রাখায় ভুলভাল হয়েছে। সেটা কি নিজেরা ১৯২ তোলার পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের খানিকটা অপ্রত্যাশিত পাল্টা ঠ্যাঙানির ধাক্কায়? না হলে অশ্বিন কী করে একটা নয়, দু’টো ওভার কম করে? মেরিন ড্রাইভের ধারের ওয়াংখেড়েতে শেষ মার্চের রাতের দিকে শিশির একটা ফ্যাক্টর। স্পিনারদের বল গ্রিপ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। তা হলে উনিশতম ওভার ধোনি কেন জাডেজাকে আনল? নেহরা তো বটেই, এমনকী ওর প্রিয় হার্দিক পাণ্ড্যর কোটাও আগেভাগে শেষ করে দিয়ে বসল?

আনন্দবাজার বলছে, ধোনির এক অদ্ভুত অভ্যাস তৈরি হয়েছে শেষ কয়েক বছরে। টিমে এক-এক জনের উপর অগাধ আস্থা। আর সেই আস্থাটা যে টিমমেটের উপর, তার সবই ভাল ওর কাছে। নইলে এ দিন অশ্বিন দু’ওভার কম করে? আর পাণ্ড্য পুরো কোটা করে?  তবে যুবরাজের না থাকাটা ধোনির বোলিং-প্ল্যানে এ দিন একটা ধাক্কা ছিল তো বটেই। তা ছাড়া যেখানে অশ্বিনই দু’ওভার কম করে, সেখানে ভাজ্জি আর কী আস্থা পেত ক্যাপ্টেনের?

তা ছাড়া যে দিনটা আপনার নয়, সে দিন আপনার বিপক্ষে অদ্ভুত কিছু ব্যাপারও ঘটবে।  দিনটা টিম ইন্ডিয়ার ছিল না বলেই, গোটা বিশ্বকাপ জুড়ে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং পারফরম্যান্স দেখিয়েও কিনা কোহলির ওভারেই ভারতের বিরাট বিদায় ঘটে!

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।