আন্দোলন স্থগিত করলেন চবির শিক্ষার্থীরা

Image

চবি প্রতিনিধি , ২২ জানুয়ারি, ২০২৩:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সাত দিনের জন্য আন্দোলন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন। এখন শর্তসাপেক্ষে আগামীকাল সোমবার থেকে তারা ক্লাস করবেন। তবে তারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে নয়, বাইরে বসেই ক্লাসে অংশ নেবেন।

রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মুহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের আন্দোলন এক সপ্তাহের জন্য শিথিলের ঘোষণা দেন।

আরো পড়ুন:যবিপ্রবির অপেক্ষমান তালিকা: ভর্তিচ্ছুদের আজ চূড়ান্ত ভর্তির সুযোগ

চারুকলা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শহীদ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী তাঁদের ক্লাসে ফেরার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আজ সাবেক সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসক একই অনুরোধ করেছেন। ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় তাঁরা আন্দোলন শিথিল করছেন।

মোহাম্মদ শহীদ বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ তাঁরা দেখতে না পান, তাহলে পুনরায় পূর্ণ আন্দোলনে যাবেন।

গতকাল বেলা ৩টায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি চারুকলা ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার, সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

শিক্ষামন্ত্রী চারুকলা ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। ইনস্টিটিউটের অবকাঠামোগত সংস্কারসহ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।

শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ দাবিতে গত ২ নভেম্বর ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। তার পর থেকে তাঁদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকে। পাশাপাশি তাঁরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে ৫ নভেম্বর উপাচার্য শিরীণ আখতার বরাবর চিঠি দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ১০ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ১৬ নভেম্বর তাঁরা ইনস্টিটিউটের ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ শুরু করেন। ২১ নভেম্বর রাতে ৯ ঘণ্টা ইনস্টিটিউটের ভেতরে সহকারী প্রক্টরসহ ১২ শিক্ষককে অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

চবিতে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক হয়ে গঠিত হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট।

ইনস্টিটিউটের অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরের মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে। বর্তমানে ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫৩। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ১৭৯ জন, ছাত্র ১৭৪ জন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ইনস্টিটিউটের শ্রেণিকক্ষগুলোর অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। ছাত্রীদের জন্য মাত্র একটি শৌচাগার আছে। আবাসন সুবিধা পান মাত্র ১৩ শিক্ষার্থী। গ্রন্থাগারে বই নেই। ডাইনিংয়ে খাবারের ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় তাঁরা মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে চান।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।