অর্ধেকের বেশি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের অনুমোদন নেই

Image

সরকারের হিসাবে দেশে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৩৯টি হলেও এ সংখ্যা ৩৫০’র বেশি বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। এর মধ্যে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অর্ধেকের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নীতিমালা-২০১৭ মোতাবেক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়ে চলছে।

দেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ও নীতিমালা না থাকায় সব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয়। এতে টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি, ভর্তি ফিসহ নানা ফি ও খরচাদি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো করে ঠিক করে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত অনেক ফি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে থাকে যা অপ্রয়োজনীয়।

আরো পড়ুন: নতুন করে ৭৯ বিদ্যালয় পেল স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতি

এছাড়াও বিভিন্ন খাতে গৃহীত এসব ফি শিক্ষার্থীদের পেছনে কতটুকু খরচ করা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তাদের। তবে, দেশে এসব নামীদামি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিস্তার ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে কতটুকু ভূমিকা রাখছে—এমন প্রশ্নে কোনো আশার আলো দেখছেন না শিক্ষাবিদ ও দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ও আইন না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না শিক্ষা বোর্ডগুলো। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর কমিটি থেকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পরিচালনা সংক্রান্ত একটি নীতিমালার করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও দেশে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের ৫ জুন নির্দেশিত ১৯৬২ সালের রেজিস্ট্রেশন অব প্রাইভেট স্কুলস অর্ডিন্যান্সের ক্ষমতা বলে বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নীতিমালার অনুমোদনে চলছে ইংরেজি মাধ্যমের প্রতিষ্ঠান। যদিও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) থেকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা করে তা ২০২২ সালে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা ছিল। তবে তা পাঠানো হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ব্যয়বহুল ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তিসহ ন্যূনতম এক বছর পড়াশোনা করতে খরচ হয় সর্বনিম্ন ২ লাখ থেকে শুরু করে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়াও এসব প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পড়াশোনা করাতে নানাখাতে আরও বিভিন্ন ধরনের অর্থ খরচ করতে হয় অভিভাবকদের।

দেশে আধুনিক, সময়োপযোগী এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ এবং তার বিপরীতে প্রাপ্ত সেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন ছিল শিক্ষাবিদ এবং দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।

তবে সাম্প্রতিককালে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, তারা চেষ্টা করছে খরচের সঙ্গে মানের সমন্বয় করে সেবা দিতে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা নীতিমালা না থাকায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো ব্যবস্থা বা কাঠামোয় দাঁড় করাতে পারছে না সরকার। ফলে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অর্ধেকেরও বেশি ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত দু’টিসহ ১৩৯টি। এর মধ্যে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের সংখ্যা যথাক্রমে ৩০ এবং ৯২। এ ছাড়াও জুনিয়র স্কুল রয়েছে ১৫টি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।