মনিরুজ্জামান সুমন: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা। সপ্তাহ ধরে জেলায় ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত চার দিন (১৬ -১৭-১৮-১৯ এপ্রিল) ধরে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ জেলার তাপমাত্রা থাকছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। আজও দুপুর ১২টায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তাপপ্রবাহের এমন অবস্থা এ জেলায় নতুন নয়। প্রতি বছর বেশ কয়েক বার ঘুরে ফিরে আসে তাপপ্রবাহ। কিন্তু এই জেলায় বা এর আশপাশে কেন তাপমাত্রা এমন তারতম্য হয়? গরমের সময় যেমন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেমনি শীতের সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এই জেলায়।
পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভৌগোলিক অবস্থান এবং স্থানীয় জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে চুয়াডাঙ্গায় তাপপ্রবাহ বেশি ও শীতের সময় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন হয়ে থাকে।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, ‘গ্রীষ্ম মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি থাকে। চলতি মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯ এপ্রিল শুক্রবার এসব রেকর্ড ভেঙ্গে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে দেখছি চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪০-এর কাছাকাছি থাকে। গত বছর এই সময়ে জেলার তাপমাত্রা ছিল ৪১ থেকে ৪২ ডিগ্রি উপরে। সে তুলনায় সামান্য কম হলেও একই রকম তাপ অনুভব হচ্ছে।’
এ দিকে, গত ১৬ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলিসয়াস, ১৭ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলিসয়াস, ১৮ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস, ১৯ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ ২০ এপ্রিল শনিবার দুপুর ১২টায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা আবহাওয়া অধিদফতরের ভাষায় তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপ অনুভব হয়। এর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। একটা অঞ্চলে যখন হিট ওয়েভ শুরু হয় তখন যদি এটা দ্রুত রিলিজ হতে না পারে তাহলে সেখানে গরম বেড়ে যায়। তাপ দ্রুত রিলিজ না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, গাছপালা কমে যাওয়া, জলাধার কমে যাওয়া এসব কারণেই মূলত তাপটা রিলিজ হয় না। ফলে তাপমাত্রাটা বাড়তে থাকে।’