কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন মো. নেওয়াজ মোর্শেদ ওরফে জুয়েল মিয়া। শিক্ষক হওয়ার লালিত স্বপ্ন নিয়ে ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেন।
ভালো ফলাফল করে জাতীয় মেধাতালিকায় ৩০তম স্থান অর্জন করেছিলেন। ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আইসিটি (প্রভাষক) পদে চাকরির আবেদন করলেও নিয়োগ সুপারিশ পাননি তিনি।
জুয়েল মিয়ার অভিযোগ, পদের নাম আইসিটি হলেও আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। নিয়োগে প্রাধান্য পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিষয়ে নিবন্ধন সনদ অর্জন করা ব্যক্তিরা।
তিনি বলেন, আমার আবেদনের ১৯টি কলেজের মধ্যে মেধাক্রমে আমার চেয়ে পিছিয়ে থেকেও সিএসই বিভাগ থেকে পাস করা ১০ জন নিয়োগ পেয়েছেন। আইসিটি পদে নিয়োগ পাওয়ার অগ্রাধিকার আইসিটি নিয়ে পড়ালেখা করা গ্র্যাজুয়েটদের হওয়ার কথা। সেটি না করে সিএসই নিয়ে পড়ালেখা করা গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এটি প্রহসন ছাড়া কিছুই না। আমরা বৈষম্যের শিকার। মেধাক্রম অনুসারে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রাথমিক সুপারিশের ফলাফল পুনঃমূল্যায়নের দাবি জানাচ্ছি।
শুধু নেওয়াজ মোর্শেদ নয়; চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আইসিটি প্রভাষক পদে চাকরির আবেদন করে সুপারিশ বঞ্চিত হয়েছেন আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীরা।
আইসিটি পদে আইসিটি নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ দেওয়া না হলে এই বিষয়ের সনদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। নিবন্ধনধারীদের অভিযোগ, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে মেধারভিত্তিতে নিয়োগের কথা বলা হলেও সেটি করা হয়নি। নম্বরের ভিত্তিতে সুপারিশ করায় সিএসই বিষয়ের নিবন্ধনধারীরা বেশি সুপারিশ পেয়েছেন। এই অবস্থায় ফলাফল পুনঃমূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বলছে, প্রার্থীদের আবেদন এবং মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক পদ্ধতিতে করা হয়েছে। আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীদের প্রাপ্ত নম্বর কম। অন্যদিকে সিএসই বিষয়ের নিবন্ধনধারীদের নম্বর বেশি থাকায় তারা সুপারিশ পেয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আইসিটি প্রভাষক বিষয়ের পদ ছিল ১২৮টি। এর মধ্যে ১০৬টি পদে নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্সের নিবন্ধনধারীরা। অবশিষ্ট পদগুলোতে আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীদের সুপারিশ করা হয়েছে। এসব প্রার্থীরা পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে চূড়ান্ত সুপারিশপত্র পাবেন।
আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীরা বলছেন, ২০২২ সালের ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিত ও বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তিতে মেধাক্রম অনুসারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। তখন কোন সমস্যা হয়নি।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ৭ নং পয়েন্টে মেধাক্রম অনুযায়ী সুপারিশ করা কথা বলা হলেও সেটি মানা হয়নি। গণবিজ্ঞপ্তির কোথাও নম্বরের ভিত্তিতে সুপারিশের কথা উল্লেখ ছিল না। হুট করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধনধারীরা বঞ্চিত হয়েছেন। প্রায় সকল ক্ষেত্রে আইসিটি নিবন্ধনধারীদের ডিঙ্গিয়ে মেধাতালিকায় পিছিয়ে থাকা সিএসই নিবন্ধনধারীরা নিয়োগ পেয়েছেন।