২৩৯ প্রাথমিকে ইংরেজি ক্লাসে কথা হবে শুধু ইংরেজিতে

Image

উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিকে ইংরেজি শিক্ষার মান বাড়াতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। সে লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করেছেন।

গত বুধবার থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ কাজের অবসরে ২০জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে নিজেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ইউএনও আবুল হায়াত। এতে যেমন শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়বে ঠিক শিক্ষার্থীদেরও ইংরেজি শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন হবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার ২৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি ক্লাসে শতভাগ পাঠদান নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও। এতে খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক মহল।

শিবগঞ্জ উপজেলার পিঠালিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.কামাল উদ্দীন বলেন, ‘দক্ষ প্রশিক্ষকেরা শিক্ষকদের বাছাই করে ইংরেজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এরপর শিক্ষক সাধ্যমতো ক্লাসে ইংরেজিতে পাঠদান করেন। ইউএনও যদি শতভাগ নির্ভুল প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেন এবং মনিটরিং করেন, তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই উপকৃত হবে।’

ধোবড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.এহসানুল আবেদিন বলেন, ‘আমরা তিনজন ইংরেজির মাস্টার ট্রেইনার শিক্ষকদের উপজেলা টিচার্স রিসোর্স সেন্টারে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যারা পাঠদানে মনোযোগী এবং দক্ষ তাঁদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁরা নিজ স্কুলে গিয়ে পাঠদান দিয়ে থাকেন। তবে ইংরেজি ক্লাসে শতভাগ পাঠদান নিশ্চিত করা যায় না।’

এহসানুল আবেদিন আরও বলেন, ‘বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ইউএনও যতক্ষণ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি একটিও বাক্য বাংলায় উচ্চারণ করেননি। তাঁর এমন প্রশিক্ষণ যদি অব্যাহত থাকে তবে ইংরেজিতে শতভাগ ইংরেজি ক্লাসে পাঠদান সম্ভব।’

শিবগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ও অভিভাবক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসায় ইংরেজির আলাদা শিক্ষক থাকে। সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রাথমিক ক্ষেত্রে। সাধারণ শিক্ষকদের দিয়ে শতভাগ ইংরেজি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তবে ইউএনও যদি তাঁর প্রশিক্ষণ এবং মনিটরিং অব্যাহত রাখেন তবে তাঁর উদ্যোগ শিবগঞ্জের জন্য হবে মাইলফলক।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জেছের আলী বলেন, ‘একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ইংরেজি শিক্ষার বিষয়ে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে সারা দেশে শিক্ষায় রোল মডেল হবে শিবগঞ্জ।’

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন,‘ চরাঞ্চল এবং সীমান্তবর্তী উপজেলা শিবগঞ্জ। এখানকার মানুষের শিক্ষার প্রতি চরম আগ্রহ রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক কারণে অধিকাংশই উন্নত শিক্ষা নিতে পারে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেন উন্নত শিক্ষা অর্জন করতে পারে, সেই ধারণা থেকেই ইংরেজি শিক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে– তাঁদের পুরো সময়টা ইংরেজিতে বোঝানো হচ্ছে। ঠিক একইভাবে শিক্ষকেরা ইংরেজি ক্লাসে ইংরেজিতে পাঠদান করবেন। তবেই এগিয়ে যাবে ইংরেজি শিক্ষা।’

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।