২য় শ্রেণি ননগেজেটেড নয়,১০ম গ্রেডে বেতন ভাতা চান দেশের প্রধান শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ননগেজেটেড পদমর্যাদা নয়, দ্বিতীয় শ্রেণীর নির্ধারিত ১০ম গ্রেডে বেতন ভাতা চান প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় এক প্রেস বিজ্ঞপিতে এ খবর জানান প্রধান শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা। এতে বেতন স্কেল ১০ম গ্রেড গেজেটেড পদমর্যাদাসহ ৫দফা দাবী জানান হয়।

জানা যায়,প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা গেজেটেড মর্যাদা নয়, দ্বিতীয় শ্রেণীর ১১তম  ও ১২ তমগ্রেডে  বেতন ভাতা পাচ্ছেন। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণি গেজেটেড মর্যাদায় উন্নীত করেন। দীর্ঘ ৩ বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও গেজেটেড পদমর্যাদা বাস্তবায়ন হয়নি।  তাদের দাবী আদায়ের লক্ষে প্রধান শিক্ষক সমিতি ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর কয়েকবার স্বারকলিপি প্রদান, চেয়ার বর্জন কর্মসুচি সহ নানাবিধ কর্মসুচি গ্রহন করেছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর ৪৯০ তাং ২৬/১১/২০১৩ খ্রি: ও অর্থ বিভাগের স্মারক নম্বর ২৮৩ তাং ০৪/১২/২০১৩ খ্রি:এর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণির সম্মতি পত্র এবং ০৯/০৩/২০১৪ খ্রি: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগোপযোগী ঘোষনা প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণি মর্যাদা প্রদানে বিরাট মাইলফলক।যদিও ৯ মার্চ তারিখের ১১১ নম্বর স্মারকের পত্রে শুধু “গেজেটেড” শব্দটি না থাকায় ১১তম ও ১২তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের পত্র ইস্যু হয় কিন্ত শিক্ষা বান্ধব ও শিক্ষক মর্যাদাদায়ক জন নন্দিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৮/০৩/২০১৫ খ্রি: তারিখের সভায় ভুলবশত “গেজেটেড” শব্দটি উহ্য থাকায় সংশোধন পূর্বক প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণি গেজেটেড মর্যাদা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।তাছাড়া অর্থ বিভাগের ২৭/১১/২০১৪খ্রি: স্মারক নম্বর ২৬৮ পত্রে জাতীয় বেতন স্কেল/২০০৯ এর ৭(২)(৯) এর আলোকে ৪ বছর পূর্তিতে সিলেকশন গ্রেড এবং ৮ ও ১২ বছর পূর্তিতে ১ম ও ২য় টাইমস্কেল প্রাপ্য হবেন মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয় যা প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণি গেজেটেড মর্যাদার বেতন নির্ধারণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর ১৯০ তারিখ ১১/০৮/২০১৫ খ্রি: পত্রে প্রধান শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি পি এস সি কে অর্পণ এবং প্রাগম কর্তৃক স্মারক নম্বর ৮৮ তারিখ ০৭/০২/২০১৬ খ্রি: এর আপাতত নন-গেজেটেড বিবেচনায় বেতন নির্ধারনের পত্র অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নাকচ এ সব গুলিই প্রধান শিক্ষক যে গেজেটেড ২য় শ্রেণি তা প্রমাণ করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় সিনিয়ার যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এস এম সাইদুল্লাহ ও স্বরুপ দাস বলেন প্রধান শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবী ২য় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদাসহ ১০ম গ্রেড। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৯মার্চ ২০১৪ইং প্রধান শিক্ষকদের ২য় শ্রেণি ঘোষনা দেন। কিন্তু দীর্ঘ ৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত এর কোন সুফল আমরা পাইনি। আমাদের দাবী বাস্তবায়ন না হলে আমরা প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য থাকব। এছারা কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ সারা দেশের সকল প্রধান শিক্ষককে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান প্রেস বিজ্ঞপিতে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় নেতা অরুন কুমার দাস বলেন  অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর ৭৫২,তারিখ ০৫/১০/২০১৬ খ্রি: তারিখে জারি করা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে নিয়োগ/পদোন্নতি /টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড প্রদানে প্রতিনিধি প্রেরণ/মনোনয়ন এর অফিস আদেশে উল্লেখ আছে যে গ্রেড-১১ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির গ্রেড । অধিকন্তু শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়নে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি মোট ০৯টি শ্রেণির দায়িত্ব পালন করে বেতন পাবেন ১১ ও ১২ তম গ্রেডে অন্যদিকে একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুনিয়র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাত্র ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি মোট ০৩টি শ্রেণির দায়িত্ব পালন করে বেতন পাবেন ৭ম গ্রেডে এই ব্যবধান কি করে হবে? এতে করে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে মেধাবীদের প্রবেশের জন্য পি এস সি’র মাধ্যমে বি সি এস উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রদানের যে উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার তাও বাধাগ্রস্ত হবে।অতএব প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকদের ন্যূনতম ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই।

উল্লেখ্য,১০ এপ্রিল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বেতন ভাতা নির্ধারণে জটিলতা নিরসনে সিদ্ধান্ত হয়। ইতিমধ্যে বেতন ভাতা জটিলতা নিরসনের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।   ৭ সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তার সদস্যরা হলেন, অর্থ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত শেখর বিশ্বাস। এ ছাড়া দু’জন শিক্ষক নেতাকে রাখা হবে এতে।
Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।