মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। একই সাথে ক্লাস বর্জন কর্মসূচিও পালন করছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রোববার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
আরো পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কাল
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নোয়াখালী, বরিশাল, পাবনা, কুমিল্লা, কক্সবাজার, সিলেটসহ দেশের প্রায় সব জেলার স্কুলে শিক্ষকরা তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয় আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫শ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
আরো পড়ুন: এইচএসসির ফরম পূরণের সময় বাড়লো
এছাড়া, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের এক ধাপ নিচে দেওয়া হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া বলেন, আমাদের এক দফা দাবি, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলবে। আমরা দাবি আদায় করেই ক্লাসে ফিরবো।
এদিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ৯টি সংগঠন একাত্মতা পোষণ করেছেন। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (প্রিন্স), বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন, বেসরকারি শিক্ষক ফোরাম (সাইদুল), বেসরকারি শিক্ষক ফোরাম (মাইনুদ্দিন), ভোকেশনাল শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রধান শিক্ষক পরিষদ এবং জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট।