ভাইরাসজনিত কারণে শীতকালে অধিকাংশ মানুষ অসুস্থ্য হয়ে যায়। যখন আপনি অসুস্থ্য হয়ে যান তখন শরীরের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু ক্যালরির দরকার হয়। সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখে বিশেষ করে যখন জ্বরের কারণে শরীরের তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কিছু উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
আপনি যখন অসুস্থ্য থাকবেন তখন আপনার দৈনন্দিন খাবার তালিকাটি ঠিক রাখতে হবে। কারণ ক্যালরিযুক্ত খাবারের অভাবে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আর পরবর্তীতে এই ক্যালরি পূরণে অনেক সময় লেগে যায়।
সর্দি কাশির ফলে ক্ষুধামন্দা তৈরি হয়। এসময় ভালো পুষ্টিকর খাবার ও অতিরিক্ত জলজ খাবার খাওয়া প্রয়োজন যেগুলো আপনার শরীরে শক্তি এবং পুষ্টি যোগাবে।
ঠান্ডা কমাতে প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। যেমন- স্যুপ : এটি চিরাচরিত স্যুপের মত নয়। এতে মুরগি এবং নুডুলস যুক্ত করতে হবে। মুরগিতে কিসটেইন নামক অ্যামিনো এ্যাসিড রয়েছে যেটি ফুসফুসে পাতলা শ্লেষ্মা জমানো রোধ করে, গরম জুস অনুনাসিক আর্দ্রতা আনতে সহায়তা করে, জল বিয়োজন প্রতিরোধ করে এবং গলার ব্যথা কমায়। এছাড়া অন্যান্য উপাদানগুলি ঠান্ডা কমাতে সহায়তা করে।
গরম চা : উষ্ণ তরল গলা ব্যথা প্রশমিত করে এবং অস্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালণ উপশম করে। ফলে সতেজ গ্রীন টি খাওয়া দরকার যেটি সংক্রমণ প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এর যোগান দেয়। আপনি যদি চা পছন্দ না করেন তবে লেবুর রসযুক্ত গরম পানি বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন।
সাইট্রিক এ্যাসিডযুক্ত ফলমূল : এটি একটি প্রচলিত কথাই রয়েছে যে ভিটামিন সি’র ফলে ঠান্ডা আরোগ্য হয়। যদিও এই কথাটির পেছনে কোনো উপযুক্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। সাইট্রিক এ্যাসিডযুক্ত সব ধরনের ফলই কার্যকরী নয়। কমলালেবু, লেবু এবং বাতাবি লেবুর ত্বকের উপরের নরম সাদা অংশে ফ্ল্যাভোনয়েডস থাকে যেটি ঠান্ডা থেকে দ্রুত আরোগ্যে সহায়তা করে।
পপসিকলস : ঠান্ডা রোধে ফল সরাসরি খাওয়ার চেয়ে এর জুস করে খাওয়া বেশি কার্যকরী। পপসিকলস এর জন্য বেশ কার্যকর বিশেষ করে গলা ব্যথার ক্ষেত্রে যদি নি সেটি ১০০ ভাগ ফলের রসে বা পুরো ফলের রসে ভরপুর থাকে।
মশলাযুক্ত খাবার : মশলাযুক্ত খাবার খেলে আপনার বন্ধ নাক খুলে যাবে। কাঁচামরিচ, ঝাল সজিনা খেলে এক্ষেত্রে অনেকটাই উপকার পাওয়া যাবে।
উদরপূর্তি খাবার : ঠান্ডার সময়ে এমন কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন যা খুব দ্রুত হজম হয়ে যায়। এরকম কিছু খাবার হল –
ক্র্যাকার্স ও টোস্ট : বিভিন্ন স্বাদের ক্র্যাকার্স এবং টোস্ট খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়। উচ্চ মাড়যুক্ত খাবার বমিভাব দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে।
কলা : কলাতে অনেক পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যেটি অতিরিক্ত ঘাম, বমি বা ডায়রিয়া কমিয়ে ফেলে। এটি হজমে সহায়তা করে, দেহের তাপমাত্রা কমায় এবং হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটস ফিরিয়ে আনে।
আদা : গবেষণায় বলা হয় যে শীতল বমি বমি ভাব এবং অন্যান্য কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ব্যথা ও বমির মত কিছু গ্যাস্ট্রিক রোগ প্রতিরোধে আদা কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আদার চা পান করা বা শুধু আদার পানীয় খেলে পেটের যন্ত্রণাসহ অনেক অসুখই শিথিল করে।
ডা:এস কে দাস, ডি এইচ,এম,এস (অধ্য:) ঢাকা
by