যশোরে হচ্ছে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র

যশোর: যশোরে ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এ কেন্দ্রে ভিসার আবেদনপত্র গ্রহণ ও ভিসা বিতরণ শুরু করা হবে।

এতে বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্যে গতি বাড়বে। খুলনা বিভাগের আট জেলার মানুষের দুই দেশে যাতায়াতের জন্য ভিসা পাওয়া সহজ হবে।

স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার খুলনা শাখার প্রধান মানিক চক্রবর্তী  বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্রের নতুন শাখা যশোর শহরে খোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটি হবে খুলনা বিভাগের দ্বিতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্র।

প্রতিদিন তিন হাজারের মতো টোকেন ছাড়া হয় খুলনা ভিসা কেন্দ্রের জন্য। এর মধ্যে অন্তত দেড় হাজার আবেদনপত্র দৈনিক জমা নেওয়া হয়। যশোরে নতুন শাখা হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে আরও গতি আসবে।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেনাপোল ও পেট্রাপোল স্থলবন্দরে সমন্বিত তল্লাশিচৌকির যৌথ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

দুই দেশের সম্পর্ক ও যোগাযোগ উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে যশোরে নতুন ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। যদিও অনেক আগে থেকেই বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ভারত-বাংলাদেশ আমদানি রপ্তানি কমিটির নেতারা নতুন শাখা খোলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

বেনাপোল কিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, আমদানিনির্ভর মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশের মোট ব্যবসার ৭০ শতাংশ হয় যশোরে।

যশোরে ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্র হওয়ায় খুলনা বিভাগের নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া জেলার ব্যবসায়ী ও চিকিৎসাসেবা নেওয়া মানুষের খুব সুবিধা হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি আসবে।

মফিজুর রহমান বলেন, খুলনার ভিসা অফিসে প্রতিদিন এত পরিমাণ ভিড় থাকে যে, বেশির ভাগ দিনে ভিসা আবেদনপত্র জমা ও ভিসা গ্রহণ করা যায় না।

টাকাপয়সা খরচ করে দূরদূরান্ত থেকে খুলনায় গিয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। অনেক সময় দু-তিন দিনও লেগে যায়। যশোরে নতুন এ শাখা হওয়ায় যাতায়াত খরচ ও সময় দুই-ই সাশ্রয় হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর শহরের মনিহার প্রেক্ষাগৃহ এলাকায় একটি ভবন ভাড়া নিয়ে ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে ভবনে সাজসজ্জার কাজ চালানো হচ্ছে বলে শ্রমিকেরা জানান।

বেনাপোল অভিবাসন পুলিশ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাসপোর্টের মাধ্যমে বেনাপোল স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছেন।

দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল। দেশের আমদানিনির্ভর মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশের বড় বাজার যশোরে। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় যশোরের মানুষের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ একটু বেশি। যে কারণে যশোর শহরে ভারতীয় ভিসা কার্যালয় স্থাপনের জন্য এ অঞ্চলের মানুষের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সেই দাবি বাস্তবায়ন হতে চলেছে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।