সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী মো. রাসেল জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিরাজুল আলম খান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতারা।
আরো পড়ুন: তিন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি
জানা গেছে, শনিবার বায়তুল মোকাররমে সকাল ১০টায় তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। তার দাফন হবে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলীপুরে। ছোটভাই ফেরদৌস আলম খান জানান, দাদাভাইর ইচ্ছা অনুযায়ী আলীপুর সাহেববাড়িতে মায়ের শাড়িতে মুড়িয়ে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
সিরাজুল আলম খান তার শেষ ইচ্ছা লিখে গিয়েছিলেন। তিনি বলে গেছেন, আমার মৃত্যুর পর কোনো শোকসভা হবে না। শহীদ মিনারে ডিসপ্লে হবে না লাশ। যত দ্রুত সম্ভব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হবে মরদেহ, যা ঢাকা থাকবে একটা কাঠের কফিনে। মায়ের একটা শাড়ি রেখে দিয়েছি। কফিনটা শাড়িতে মুড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে, মায়ের কবরে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন তিনি। তাত্ত্বিক গুরু খ্যাত সিরাজুল আলম খানকে বৃহস্পতিবার রাতে লাইফসাপোর্টে নেওয়া হয়। ৮২ বছর বয়সী এই নেতা উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট এবং ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
গত ৭ মে থেকে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার। ২০ মে তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ২০২১ সালে অসুস্থ হয়ে কিছুদিন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
স্বাধীনতালগ্নে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।
স্বাধীন হওয়ার পরপরই শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে সিরাজুল আলম খানের বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। সিরাজুল আলম খানের অনুসারী ছাত্রলীগ ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করে।
তিনি কখনও মূল নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকেন। সম্পাদনা: স্বরুপ দাস