বেসরকারি মেডিকেল ভর্তিতে চলমান অটোমেশন বাতিল চায় বিপিএমসিএ

Image

বেসরকারি মেডিকেলে চলমান অটোমেশন (স্বয়ংক্রিয়) প্রক্রিয়া বাতিল চেয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)। একই সাথে দেশের বেসরকারি মেডিকেল ভর্তিতে অটোমেশনের পরিবর্তে পূর্বের নিয়ম বহাল রাখার দাবিও জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বিপিএমসিএ সভাপতি এম এ মুবিন খান এবং সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক যৌথ চিঠিতে এ দাবি জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বরাবর প্রেরিত ওই চিঠির সংযুক্তি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরেও।

আরো পড়ুন: বেসরকারি মেডিকেলের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মুখোমুখি মন্ত্রণালয়-অধিদপ্তর

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এবার বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যে আমরা জানতে পেরেছি, গত ১৮ জুন ২০২৩ তারিখে ১০০ টাকা জমা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়নের শেষ তারিখে মাত্র তিন হাজার ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রী কনফার্ম করেছে। এতে সকল বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ আসন পূর্ণ হবে না বলে আমাদের ধারণা অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হওয়ায় কলেজ ছাত্র-ছাত্রী পাচ্ছেনা। এ কারণে বেসরকারি স্বাস্থ্য শিক্ষাখাতের সকলের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

এ বছর ৪৯ হাজার ছাত্র-ছাত্রী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের মধ্যে বেসরকারি মেডিকেলের ভর্তির জন্য যখন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তখন মাত্র ৬ হাজার ৩২০ টি আবেদন পাওয়া যায়। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন সংখ্যা হচ্ছে ৬ হাজার ৫০০ এর মতো। এতে ১:১ অনুপাতে মেধাক্রম অনুযায়ী আসন সংখ্যা পূর্ণ হয় নাই। ভর্তি নীতিমালায় বলা আছে ১:৫ অর্থাৎ একটি আসনের বিপরীতে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচন হবে। কিন্তু প্রকৃত চিত্র হচ্ছে একটি আসনের জন্য এখন ১ জন শিক্ষার্থীও নেই। সবকিছু মিলিয়ে বিশৃঙ্খল একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।

পৃথিবীর কোন দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী সরকার ভর্তি করে দেওয়ার নির্দেশনা নেই জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় দুতাবাসের তথ্য মতে দেখা যায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রথম বর্ষ হতে ইন্টার্নশিপ পর্যন্ত এই মুহূর্তে ১২ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী এমবিবিএস কোর্সে অধ্যয়ন করছে। এতে দেশ ২০০ মিলিয়নেরও বেশী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে যা বিশ্বের এই সংকটময় মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখছে। তাই সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে পূর্বের ভর্তির নিয়ম বহাল রাখার বিকল্প নেই।

ঢাকা শহরে একজন অভিভাবক তার সন্তানকে নিজ অর্থে ঢাকায় পড়াতে আগ্রহী থাকলে এখানে সে অটোমেশনে ঢাকার বাইরে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলে সেই ক্ষেত্রে তার মেডিকেল শিক্ষার প্রতি অনীহা তৈরি হবে। বেসরকারি মেডিকেলের মত ব্যয়বহুল শিক্ষায় যারা পড়তে ইচ্ছুক তারা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে নিজেদের পছন্দের কলেজে পড়তে চায়। কিন্তু অটোমেশনের ফলে তাকে যদি এমন মেডিকেলে দেওয়া হয় সেটা তার জন্য পছন্দনীয় নয়, এতে তার মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করবে। ফলে তারা মেডিকেলে ভর্তি হতেই অনিচ্ছুক হয়ে পড়ছে। এ কারণে অটোমেশন প্রক্রিয়ার পরিবর্তে পূর্বে প্রচলিত ভর্তি ব্যবস্থাই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ উভয়ের জন্য সুবিধাজনক—দাবি করা হয় চিঠিতে।

প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে অটোমেশন (স্বয়ংক্রিয়) পদ্ধতি চালু করে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তিতে নানা অনিয়ম ও অর্থের বিনিময়ে অমেধাবীদের ভর্তির সুযোগ বন্ধে এই উদ্যোগের কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

সুত্র: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।