বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত হয়নি ৭ মাসেও

Image

রাজধানীর উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত হয়নি। প্রায় সাত মাস হতে চললেও এখনো কোনো কুল কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এই অবস্থায় মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন মামলার বাদী।

২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার দিকে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ৭/সি নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস নামের ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

পরিবারের দাবি, এক মডেলের সঙ্গে পরকীয়া ও যৌতুকের দাবিতে জান্নাতুলের স্বামী ফিরোজ আলম মোশরাকিন তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

তবে পুলিশের দাবি, জান্নাতুল স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে এবং দাম্পত্য কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জান্নাতুল আইউবিএটিতে পড়া অবস্থায় ফেসবুকের মাধ্যমে ফিরোজ আলম মোশরাকিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৮ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে এক কন্যা এবং ছেলে সন্তান হলেও বিয়ের পর থেকে মোশরাকিন জান্নাতুলকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। রুপা নামে এক মডেলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে মোশরাকিনের। এ বিষয়ে পারিবারিক ভাবে কয়েকবার বসে সমাধান করা হয়। মোশরাকিন ব্যবসা করবে বলে পাঁচলাখ টাকা দাবি করে জান্নাতুলের সঙ্গে প্রায় খারাপ ব্যবহার করতেন।

মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মোশরাকিনকে সেই টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার বন্ধ হয়নি। পাশাপাশি তার পরকীয়া সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। বিষয়টি মডেল রুপা ও তার মা রেহানাকে অবহিত করা হয়। কিন্তু তারা সে বিষয়ে সমাধান না করে আমার মেয়েকে ডিভোর্স দিতে বলে। এরমধ্যে আমার মেয়ে তার স্বামীর মোবাইলে রুপা ও মোশরাকিনের কক্সবাজারের ভ্রমণের বিমান টিকিট, বেশ কিছু ছবি-ভিডিও দেখতে পায়। এছাড়া তাদের মধ্যে অনেক অনৈতিক কথাবার্তা দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এরমধ্যে মোশরাকিন আমার মেয়েকে আত্মহত্যার করতে প্ররোচনা দিতে থাকে। ১৩ ডিসেম্বর রাতে তাদের দুজনের মধ্যে ঝগড়া ও কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে মোশরাকিন আমার মেয়েকে বলে তার জীবন থেকে সরে যেতে এবং সকালে যেন তার চেহারা না দেখতে পায়। পরদিন সকালে পরিবারকে এসব কথা জানায়। তখন জান্নাতুল বলেছিল-তাকে মারপিট করা হয়েছে এবং দুই সন্তানকে বাঁচানোর অনুরোধ জানিয়ে ফোন কেটে দেয়। ১৪ ডিসেম্বর বেলা ১২ টার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মাসুদ আলম বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। মামলার তদন্ত চলছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোশরাকিন বলেন, আমি ভুল করেছিলাম পরকীয়া করে। তবে কারাগার থেকে বের হয়ে ব্যবসায় মনোযোগী হয়েছি। আমার স্ত্রী যেকোনো বিষয়ে হঠাৎ রেগে যেতেন। যেদিন সে আত্মহত্যা করল বলা হচ্ছে আগের রাতে আমার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল কিন্তু আসলে এমন কিছু হয়নি। সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য তো হয়, তবে সে যে আত্মহত্যা করবে, বিষয়টি বুঝতে পারিনি।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।