প্রাথমিকে পদোন্নতি: উল্টো পথে হাঁটছে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়!

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতির সুযোগ কমিয়ে নতুন বিধিমালা তৈরি করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এতে ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট স্তরের অফিসারদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার (টিইও) পদে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) পদ থেকে ৮০ শতাংশ পদোন্নতি দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয় ২০ শতাংশ। কিন্তু প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালায় টিইও পদে এটিইওদের মধ্য থেকে মাত্র ৫০ শতাংশ পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব ফরিদ আহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালার উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসার পদের নিয়োগ পদ্ধতিতে ৮০ শতাংশ পদোন্নতি এবং ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে এর পরিবর্তে ৫০ শতাংশ পদোন্নতি এবং ৫০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। সে আলোকে কাজ চলছে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা চাই নবীনের উদ্যোম ও প্রবীণের অভিজ্ঞতা। দুটোই আমাদের দরকার। এ জন্যই আমরা ৫০ শতাংশ পদোন্নতি ও ৫০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের বিধান রেখেছি।

সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা-২০২১-এর তৈরির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের কাজ শেষ করে তা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।

সহকারি শিক্ষা অফিসাররা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষার মাঠপর্যায়ে এটিইও পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারাই মূলত প্রাথমিক শিক্ষা মনিটরিংয়ের কাজ করেন। এ পদে যারা আসেন তারা দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী। আর এ কাজ করতে গিয়ে যারা অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, তাদেরই টিইও পদে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়া উচিত। কিন্তু মন্ত্রণালয় সেটা না করে উলটো পথে হাঁটছে।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএএস রবিউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে আমাদের কর্মকর্তারা সংক্ষুব্ধ। এ জন্যই প্রস্তাবিত নিয়োগবিধির ওপর ইতিমধ্যে শতশত কর্মকর্তা রিট করেছেন। এ ছাড়া অন্য এক মামলায় টিইও পদে সরাসরি নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন করলে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত তাতে সম্মতি দিয়েছে। আমরা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও শিগিগরই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করার জন্য নিয়োগবিধির সংশোধন করে অনেক মন্ত্রণালয়ে ১০ম গ্রেডের পদ হতে ৯ম গ্রেডের পদে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেমন—৯ম গ্রেডের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে ১০ম গ্রেডের পদ হতে ১০০ শতাংশ পদোন্নতি প্রদান করা হচ্ছে। সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হতে রাজস্ব কর্মকর্তা পদে ১০০ শতাংশ পদোন্নতি প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু অভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় যোগদানের পরেও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সমগ্র চাকরি জীবনে একটিমাত্র পদোন্নতির সুযোগও পাচ্ছেন না।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।