আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্কুলের শৌচাগার শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। অথচ প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে সেই শৌচাগার ছাত্রদেরই পরিষ্কার করতে হয়!
(বুধবার) সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি সামনে আসতেই বিতর্কের মুখে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার রায়নার বেঁন্দুয়া প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়।
ঘটনার কথা শুনেই বর্ধমান সদরের মহকুমাশাসক (দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এমন কাজের জন্য দিলীপ অবশ্য ক্ষমা চেয়ে রায়না ১ বিডিও-র কাছে মুচলেকা দিয়েছেন। অনির্বাণ বলেন, একজন শিক্ষকের এমন অন্যায় আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিতে বলা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ প্রধান শিক্ষক বেশ কিছু ছাত্রকে স্কুলের শৌচাগার পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ না শুনে দু’জন ছাত্র বাড়ি চলে যায়, আর দু’জন ক্লাসে ঢুকে যায়। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণির তিন ছাত্র বাপ্পা দাস, রাণা রায় ও নিমাই অধিকারী প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মতোই পরিষ্কারে হাত লাগায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার ছবিতে দেখা গেছে, কেউ লাঠি হাতে, কেউবা ঝাঁটা হাতে শৌচাগার সাফ করছে। এ দিন তাদের দু’টি শৌচাগার পরিষ্কার করতে হয়। তদন্তকারী দলের কাছে ওই ছাত্ররা জানায়, প্রধান শিক্ষক বা অন্য শিক্ষকেরা প্রায়ই তাদের দিয়ে এমন কাজে কার্যত বাধ্য করায়। এক ছাত্রের কথায়, আমরা কলতলা গিয়েছিলাম। সেই সময় প্রধান শিক্ষক আমাদের ৭/৮ জনকে বলে শৌচাগার পরিষ্কার করতে হবে। বাকিরা স্যারের নির্দেশ না মেনে পালিয়ে যায়। আর আমরা কথা মতো কাজ করি।
দু’জন ছাত্রকে দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করার কথা স্বীকার করে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায় অবশ্য এমন কাজের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, শৌচাগারটি শিক্ষকেরাই ব্যবহার করছিলেন। ছাত্ররা সেটি ব্যবহার করতে পারত না। জেলা স্কুল পরিদর্শককে (ডিআই) বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্টে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের শাস্তি অনিবার্য।