নিজস্ব প্রতিবেদক:: ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃন্ময় মজুমদার। তিনি ভাবতে পারেননি তার সামনে কি রকম ভয়াবহতা অপেক্ষা করছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বাগেরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মৃন্ময়। রাত ৩টার দিকে তিনি ফকিরহাটের পলতিতা বটতলা বাসস্ট্যান্ডে নামেন। একটা ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে নিজের গ্রাম পুটিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। গন্তব্যের একটু আগেই কলকলিয়া নামক স্থানে তার গতিরোধ করে তিন সন্ত্রাসী। তার কাছে টাকা-পয়সা ও মূল্যবান যা কিছু ছিল সব অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নেয় তারা। তারপর নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দেন ‘মৃন্ময় মজুমদার’। প্রকৃতপক্ষেই তিনি হিন্দু কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার তার প্যান্ট খুলে চেক করে সন্ত্রাসীরা। হিন্দু পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই চাকু চালিয়ে দেয় গলায় ৩টা, বুকে ৪-৫টা, বাম হাতে ও পেটে কিডনী বরাবর।
মৃত্যুর ভয় গ্রাস করে মৃন্ময়কে। জীবন বাঁচাতে মৃত্যুর ভান করে পড়ে যান তিনি। সম্ভবত তাকে মৃত ভেবে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় তখন।
রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে তার দিদির বাড়িতে ছুটে যান মৃন্ময়। নিজের বাড়ি থেকেও লোকজন সবাই ছুটে আসে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে ‘গুরুতর’ বিবেচনায় ডাক্তার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। মঙ্গলবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখার সময় মৃন্ময় খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন।
মৃন্ময়ের মা জানান, তার ছেলে এখন আশংকামুক্ত। একটু ভাল আছে। এইবেলা ডটকমের এই প্রতিবেদককে পুরো ঘটনাটা নিজেই জানান মৃন্ময় মজুমদার।
মৃন্ময় বলেন, আমাদের গ্রামটা হিন্দু অধ্যুষিত, অধিকাংশই অবস্থাসম্পন্ন পরিবার। ঈদের ছুটিতে অনেকেই বাড়ি ফেরা শুরু করেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।
আহত মৃন্ময় মজুমদার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োক্যামিস্ট্রি বিভাগের ৪৪তম আবর্তন এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তার দেশের বাড়ি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার পুটিয়া গ্রামে।
পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে বলে জানান মৃন্ময় মজুমদার।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।