ধর্ষিতার ছবি প্রকাশে বিবিসি বাংলার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড়

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ধর্ষিতা এক নারীর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করায় বিবিসি বাংলার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ধর্ষিতার ছবি প্রকাশের ঘটনায় অনেকেই এটি বিবিসির দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন।

গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রই এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচনাকারীরা বলছেন, গণমাধ্যম জগতে বিবিসি একটি স্বতন্ত্র সত্ত্বার নাম। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে। কিন্তু এমন ছবি প্রকাশ করে বিবিসি মানুষের আস্থা ভেঙেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা সুলতানা রুমি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী নই। কিন্তু বুঝতে পারছি এ ব্যাপারে ন্যূনতম দায়িত্বশীল আচরণ দেখায়নি বিবিসি। ধর্ষিতা ওই নারীর ছবি প্রকাশ না করেও সংবাদটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা যেত। এতে নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে দ্বিতীয়বারের মতো অপদস্ত করা হলো।’

কথা হয় বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক সালাউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতায় বিবিসি-ই সবচেয়ে নীতিবিরোধী কাজ করে থাকে। এটি তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ফিদেল কাস্ত্রোকে নিয়েও একটি আপত্তিকর সংবাদ পরিবেশন করেছে বিবিসি বাংলা। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় বিবিসি’র এমন সংবাদ ঘৃণা ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়।’

তবে দ্বিমত পোষণ করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র আরিফ পারভেজ। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে পরিবর্তন এসেছে। সেকেলে ধারণা থেকে আমাদের বের হতে হবে। ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ করে নিউজের গুরুত্ব বাড়ানো যাই-ই বটে, সত্যতা মেলে। লুকোচুরি করে আসলে সমাজের পরিবর্তন আনা যায় না।

সম্প্রতি ধর্ষিতা এক রোহিঙ্গা নারীকে নিয়ে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেন বিবিসি বাংলার প্রতিবেদক ফারহানা পারভীন। প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে বিবিসি’র ফেসবুক পেজেও ওই প্রতিবেদকের ছবিসহ ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়।

এরপরই সমালোচনার মুখে পড়ে বিবিসি। পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়ে শামসুল ইসলাম নামের একজন লিখেছেন, ‘বিবিসি তার ছবি ফেসবুকে আপলোড করলো কেন? রোহিঙ্গা দেখে কি তাদের মানুষ মনে হয় না? ছবি আপলোড না করেও তো খবর প্রচার করতে পারতো। ধর্ষিতার ছবি প্রকাশের যে নিয়ম নেই সেটা কি বিবিসি ভুলে গেছে।

সোহেল মিয়া নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ছবিটি আপলোড করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি, এটা তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ফলে সামাজিকভাবে সে কিছুটা অবহেলার শিকার হবে। বিবিসির উচিত এই সকল সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছুটা দূরদর্শিতার পরিচয় দেয়া।’

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।