জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সাড়ে চার লাখ টাকায় এক ছাত্রকে মেধা তালিকায় স্থান করে দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে শিক্ষকদের সন্দেহ হলে ওই ছাত্রকে আটক করে প্রশাসন। এমন পৃথক ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের বিষয়টি সোমবার নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহসিনুল কাদির।
অভিযুক্তরা হলেন, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক এস এম শরীফ আহমেদ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগকর্মী নাজমুল হুদা (গণিত বিভাগ)। তারা দুজনই ৪২তম ব্যাচের ছাত্র।
জানা যায়, রবিবার জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ ও দর্শন বিভাগে ভর্তি হতে আসা তিন শিক্ষার্থীর হাতের লেখা পুনরায় যাচাই-বাছাই করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা। কিন্তু তারা কেউই উত্তরপত্রের হাতের লেখার সঙ্গে নিজেদের হাতের লেখা মেলাতে পারেননি। অভিযুক্তরা কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকারী মো. আল আমিন, ১৪তম মো. শাহরিয়ার কবির ও ৪৩তম হাসিন ওয়াহিদুল তুষার। এর মধ্যে তুষারের উত্তরপত্রে দেয়া ফোন নম্বরটিও ছিল আরেকজনের।
পরে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তিন জনই প্রক্সি সহায়তা নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করে। পরে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে এনে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় হাসিন ওয়াহিদুল তুষারের দেয়া তথ্যে বেরিয়ে আসে ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকা জালিয়াতি চক্রের হোতাদের নাম। জিজ্ঞাসাবাদে তুষার বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র ও আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক এস এম শরীফ আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী নাজমুল হুদা তার সঙ্গে সাড়ে চাল লাখ টাকার চুক্তি করে। পরে শরীফ ও নাজমুলকে প্রক্টর অফিসে ডেকে আনা হলে নাজমুল তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সাড়ে চার লাখ টাকা জমা হয়েছে বলেন স্বীকার করেন।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শরীফকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে শাখা ছাত্রলীগ। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া এনামুল হাসান নোলক ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. তপন কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য তাদেরকে পুলিশ আটক করেছে। পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
by