গাজীপুরের কাপাসিয়ার ভাওয়াল চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সঙ্গে ‘অনৈতিক কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগে এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যাবার সময় গণপিটুনি খেয়ে প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন তিনি। পরে কাপাসিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষক মোস্তফা কামালকে উদ্ধার করেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল ওই ছাত্রীকে সাথে নিয়ে সিএনজি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি করে সন্ধার দিকে ওই ছাত্রীকে তার বাড়ি ফিরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার সেই বাড়িতে ঢুকে দীর্ঘ সময় থেকে বের না হলে রাত ৮টার দিকে এলাকাবাসী ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায়। এলাকাবাসীর উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আরো পড়ুন: বাথরুম থেকে ৫ম শ্রেণির ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এ সময় শিক্ষকের সাথে নগদ ২৫ হাজার ৫শ ৯০ টাকা এবং ২টি জন্মনিয়ন্ত্রক (কনডম) পাওয়া যায় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মুচলেখা রেখে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মনোয়ার হোসেন জানান, ওই ছাত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল কিশোরগঞ্জের নিকলী, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যেতেন। গত মঙ্গলবার ওই ছাত্রীকে সাথে নিয়ে সারাদিন ঘুরাঘুরি করে ছাত্রীর বাড়িতে রেখে চলে গেলেও সন্ধার পর আবার ওই শিক্ষক ছাত্রীর বাড়িতে আসেন। একই অভিযোগে ৬-৭ দিন আগে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ওই শিক্ষককে মারধর করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার এসআই মো. বাহার আলম জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামালকে আটক করে নিয়ে আসার সময় চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের জিম্মায় উদ্ধারকৃত টাকা, মোবাইল, কনডম ও প্রধান শিক্ষককে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপরে ওই শিক্ষক জানান, তিনি সপ্তাহে দুই দিন সন্ধ্যার পর পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে তার বাসায় পড়াতে যান। অনৈতিক কর্মকান্ডের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো এবং এলাকাবাসী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ খাঁন জানান, অন্য কোনো ছাত্রীর বাড়িতে না গিয়ে ওই শিক্ষক প্রায়ই কেন রাতের বেলা ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায় এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে একটি সন্দেহ দানা বেঁধেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে একটি সুন্দর সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম জানান, বিষয়টি নিয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।