লক্ষ্মীপুর: কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রকের কক্ষে মেহেরাজ হোসেন রিফাত (১৫) নামের এক ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। উত্তরপত্রের হাতের লেখার সঙ্গে গরমিলের বিষয়ে সঠিক তথ্য না দেয়ায় ওই কার্যালয়ের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে মারধর করে বলে জানায় ভুক্তভোগী ছাত্র ও তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
শনিবার দুপুরে (৩০ জুলাই) লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্র সাংবাদিককের কাছে এ অভিযোগ করেন। রিফাত কমলনগর উপজেলার মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী ও একই উপজেলার চর সামছুদ্দিন গ্রামের মৃত আবি আবদুল্লাহ বাবুলের ছেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্র জানায়, গত বছরের জেএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি ২য় পত্র বিষয়ের পরীক্ষার উত্তরপত্র কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি স্ব-শরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে চিঠি দেয় কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।
গত ২৭ জুলাই সকালে সে তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কুমিল্লা বোর্ডের নিয়ন্ত্রক কায়সার আহম্মেদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। এসময় উত্তরপত্রে লেখার গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে, ক্লাসের এক সহপাঠি তার উত্তরপত্রে লিখে দেয় বলে জানায় সে। এতে তিনি সন্তুষ্ট না হয়ে উত্তেজিত হন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে ওই কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে রিফাতের হাত-পা বেঁধে লাথি ঘুষি ও পিটিয়ে আহত করে নিয়ন্ত্রকসহ ছয় থেকে সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রথমে আহত ছাত্র জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও পরে শনিবার সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
মতির হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম জানান, উত্তরপত্রের লেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই ছাত্র জানায়, তার এক সহপাঠি তার উত্তরপত্রে লিখেছে। এতে সন্তুষ্ট না হয়ে বোর্ডের নিয়ন্ত্রক কায়সার তাকে কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে ওই ছাত্রকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারধর করেন।
রিফাতের মা পারভীন আক্তার জানান, তার ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, ছাত্রের শরীরে আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। এক্সরেসহ কিছু চেকআপ করতে দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট দেখলে জখমের বিস্তারিত বলা যাবে।
এব্যাপারে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রক কায়সার আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, ওই ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। ২৭ জুলাই কয়েকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সবার শেষে মেহেরাজ হোসেন রিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উত্তরপত্রে লেখার বিষয়ে প্রথমে এসে এক সহপাঠির কথা জানায়। পরে সে সুমন নামে এক শিক্ষকের কথা বলে।