বউ পেটানো সেই আকতারুজ্জামানই শারীরিক শিক্ষার ডিডি!

নিজস্ব প্রতিবেদক,১০ এপ্রিল, ২০১৯ : বউ পেটানো ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় চার বছর বরখাস্ত ছিলেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ভূঞা। তিনটি মামলায় এখনও আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন তিনি। কঠোর শাস্তি হওয়ার কথা থাকলেও বাড়ৈ সিন্ডিকেটের সহায়তায় তার শাস্তি কমিয়ে শুধু ‘বেতনস্কেল এক ধাপ নিচে’ নামানো হয়। দণ্ড পাওয়ার তথ্য গোপন রেখে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন আকতারুজ্জামান

সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক পদও বাগিয়েছেন তিনি।  নতুন পদায়নে বাড়ৈ সিন্ডিকেটে খুশির জোয়ার বইলেও শিক্ষা ক্যাডারের সৎ ও আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তারা যারপরনাই বিস্মিত হয়েছেন। তথ্য গোপন করা আকতারুজ্জামান গংদের প্রকৃত তথ্য ও রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরে পুরান  ও নতুন সংসদ ভবনে ছুটেছেন ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা। আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধু এভিডিনিউ এবং ধানমন্ডির অফিসেও পৌঁছানো হয়েছে আকতারুজ্জামানদের প্রকৃত তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তথ্য গোপন করেছেন আকতারুজ্জামান। নিজ হাতে লেখা পার্সোনাল ডাটা শিটে (পিডিএস) বরখাস্তের তথ্য উল্লেখ করেননি তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বরখাস্ত ছিলেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত এসিআরও নেই। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ অক্টোবর তার বেতন স্কেল একধাপ নিচে নামিয়ে দেয়র তথ্যও নেই। শিক্ষা অধিদপ্তরের এসিআর-ডোসিয়ারেও তথ্য নেই।   বিএনপি-জামায়ত জমানায় তিনি ঢাকায় ভালো পদে থাকলেও সেই তথ্য চেপে রেখেছেন।

আকতারু্জ্জামানের পিডিএসে বদলি ও পদায়নের বিবরণে লেখা রয়েছে, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর তিনি ভোলা সরকারি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। শেষ কবে তা উল্লেখ নেই। তার আগে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই পর্যন্ত রামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রভাষক পদে ছিলেন। তারও আগে মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে একই বছরের ১৩ জুলাই পর্যন্ত প্রভাষক হিসেবে ছিলেন। সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মে। একইদিনে ওই পদে যোগদান করেছেন লিথলেও কোথায় যোগদান করেছেন তা উল্লেখ করেননি। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ভূঞা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, এখন আমি একটি প্রশিক্ষণে আছি। এ বিষয়ে কখা বলতে পরে যোগাযোগ করুন।

উল্লেখ্য, শারীরিক শিক্ষার উপপরিচালক পদটি অন্যতম লোভনীয় পদ। শিক্ষাবোর্ডগুলোর অঢেল টাকায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা আয়োজনের যাবতীয় কেনাকাটা আর লুটপাটের সুব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষা প্রশাসনের বড় কর্তাদের নানাভাবে খুশি করে এর আগে একজন কর্মকর্তা টানা ৯ বছর এই পদে ছিলেন। 

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।