জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষকেরই মান নিয়ে প্রশ্ন

ডেস্ক: ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষকেরই মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে ডিপিই সূত্র জানায়। অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই প্রশিক্ষণ নেই এবং চাকরি হয়েছে পরিচালনা পর্ষদকে টাকা দিয়ে। প্রাথমিকের চার লাখ শিক্ষকের মধ্যে এই জাতীয়করণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা এক লাখের ওপরে। এ ছাড়া রেজিস্টার্ড বিদ্যালয়ের জন্য ২০১২ সালে প্যানেল করা ২৮ হাজার শিক্ষকের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষের পথে। এসব শিক্ষকের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ফলে মানের দিক দিয়েও পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষা।

জরিপেও প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের হতাশার চিত্র ধরা পড়েছে। গত বছর রিসার্চ ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব কমপ্লিট এডুকেশন (রেস) প্রকাশিত এক জরিপে বলা হয়, ‘প্রাথমিকে ১৩ ভাগ শিক্ষক পুরোপুরি সৃজনশীল বা যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন বোঝেন না। ৪২ ভাগ সীমিত পরিসরে নিজেরা বুঝলেও ক্লাসে বোঝাতে পারেন না, বাকি ৪৫ ভাগ বোঝেন। সৃজনশীল না বোঝায় ৪৭ ভাগ শিক্ষক বাজারের গাইড বইয়ের ওপর নির্ভর করেন। ৩৫ ভাগ সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করেন এবং বাকি ১৮ ভাগ নিজেদের ধ্যান-ধারণা থেকে পড়ান। ’

ইউনেসকোর এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল ব্যুরো ফর এডুকেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। প্রশিক্ষিত শিক্ষকের হার মাত্র ৫৮ শতাংশ। অথচ প্রতিবেশী দেশ নেপালে প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের হার ৯০ শতাংশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ৮২ শতাংশ, মালদ্বীপে ৭৮ শতাংশ এবং মিয়ানমারে শতভাগ শিক্ষকই প্রশিক্ষিত। আর যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাবেই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত হচ্ছে না।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অন্যতম পছন্দের চাকরিই প্রাথমিকের শিক্ষকতা। এই পেশায় আয় ও সামাজিক মর্যাদা দুটিই বেশি। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন ৩০ হাজার টাকার ওপরে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কমিশন আছে। শ্রীলঙ্কায় প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি প্রথম শ্রেণির করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় শিক্ষকদের অন্যতম মর্যাদায় বসানো হয়েছে। তবে আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষিতরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চান না। ফলে বেশির ভাগ বিদ্যালয়েই সব সময় শিক্ষকের পদ শূন্য থাকে। আর যাঁরা আছেন তাঁরা মান ও মর্যাদা দুটিতেই পিছিয়ে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।